চাঁদপুরে বস্তাবন্দী অবস্থায় নারায়ণ চন্দ্র ঘোষ নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর ছায়া তদন্তে নামে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

তদন্তে সিআইডি জানতে পারে, নারায়ণ নিজে মিষ্টি বানিয়ে চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করতেন। শহরের বিপণীবাগ মার্কেটের টিপটপ সেলুনের কর্মচারী রাজু চন্দ্র শীলের (৩০) সঙ্গে আর্থিক লেনদেন ছিল নারায়ণের। পাওনা টাকা চাওয়ায় নারায়ণকে হত্যার পর মরদেহ বস্তাবন্দী করে পালিয়ে যান রাজু। রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) সিলেট থেকে রাজু চন্দ্র শীলকে গ্রেফতার করে সিআইডি।

সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।

মুক্তা ধর বলেন, গত ১৬ সেপ্টেম্বর চাঁদপুর শহরের বিপণীবাগ মার্কেটের পৌর পানির পাম্পের স্টাফ রুম থেকে নারায়ণ চন্দ্র ঘোষের বস্তাবন্দী মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত নারায়ণ চন্দ্র ঘোষ বিভিন্ন দোকানে দই-মিষ্টি বিক্রি করতেন। পাওনা টাকা আদায়ে গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাজুর কাছে যান নারায়ণ। এর পর থেকেই রাজু পলাতক রয়েছেন। এরপর দিন তার দোকান থেকে নারায়ণের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

সিআইডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন সংস্থাটির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর/ ছবি : ঢাকা পোস্ট

তিনি বলেন, গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাত ১টায় দোকানের শাটার খুলে পানি দিয়ে সেলুন পরিষ্কার করতে দেখে বিপণীবাগ মার্কেটের নৈশপ্রহরী রাজুকে জিজ্ঞাসা করেন, এতো রাতে কী পরিষ্কার করছেন? তখন রাজু নৈশপ্রহরীকে বলেন, ধর্মীয় উৎসব থাকার কারণে তিনি দোকান পরিষ্কার করে পুরনো জামা-কাপড়সহ অন্যান্য ময়লা জিনিসপত্র বস্তায় করে নিয়ে যাচ্ছেন। পরে রাজুকে বস্তাটি বিপণীবাগ মার্কেটের পশ্চিম পাশে শরিফ স্টিল ও পানির পাম্পের স্টাফ রুমের পূর্ব পাশে গলির ভেতরে ফেলে দিতে দেখেন ওই নৈশপ্রহরী।

তিনি আরও বলেন, বস্তা ফেলে রাজু আবারও দোকানে ফিরে আসেন। এরপর রাজু পানি দিয়ে সেলুন পরিষ্কার করেন। কিন্তু সেলুনের বিভিন্ন জায়গায় রক্তের দাগ দেখে নৈশপ্রহরী দোকানের মালিক কৃষ্ণকে ডেকে আনেন। এর মধ্যে রাজু দোকানের শাটার লাগিয়ে পালিয়ে যান। কৃষ্ণ এসে দেখেন মেঝেতে রক্তমাখা পানি। এছাড়াও সেলুনের দেয়ালে, চেয়ারের কভারে, মেঝতে ও বালতির মধ্যে রক্তের দাগ রয়েছে।

সিআইডির এ কর্মকর্তা বলেন, ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হলে তা সিআইডির নজরে আসে। পরে সিআইডি তদন্ত শুরু করে। রাজুকে ধরতে বিভিন্ন জায়গায় চালানো হয় অভিযান। পরে সিলেট শহর থেকে অভিযুক্ত রাজুকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাজু সিআইডিকে জানান, নারায়ণের সঙ্গে তারা আর্থিক লেনদেন ছিল। আর সেই কারণেই নারায়ণকে তিনি হত্যা করেন।

এমএসি/এসকেডি