পরিকল্পনা ছিল বাবাকে সঙ্গে নিয়ে দুপুরের খাবার খাবেন। সে পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি হোটেলেও ঢুকলেন। বসলেন মুখোমুখি। খাওয়া দাওয়া শেষও করলেন। খাওয়া শেষে কিছুক্ষণ যেতে না যেতেই খাবার টেবিলের চেয়ার থেকে ঢলে পড়লেন ছেলে। 

মেঝেতে পড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা গেলেন ছেলে রায়হান হাসনাত চৌধুরী। গতকাল বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মর্মান্তিক ওই ঘটনা ঘটে রাজধানী ঢাকার মহাখালীর একটি রেস্তোরাঁয়। 

রায়হানের বন্ধু রেদওয়ান আতিক ঢাকা পোস্টকে জানান, রায়হানের বাবা ঢাকার নবাবপুরের একজন ব্যবসায়ী। ব্যবসায়িক কাজে গতকাল তিনি গিয়েছিলেন গুলশানে। ছেলে রায়হান চাকরি করতেন মহাখালীর নিটল গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে। মায়ের কিডনি প্রতিস্থাপন নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে বেশ ব্যস্ততায় ছিলেন রায়হান। 

বাবা গুলশান আসছেন জানতে পেরে দুপুরের খাবার একসঙ্গে খেতে বলেন ছেলে। সায় দিয়ে ছেলের সঙ্গে খেতে যান বাবা। দুজনে একসঙ্গে ঢোকেন মহাখালীর একটি হোটেলে। খাওয়া শেষের পর হঠাৎ বসা থেকে কাত হয়ে হোটেলের মেঝেতে পড়ে যান রায়হান। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়।

৩৭ বছর বয়সী রায়হান হাসনাত চৌধুরীর গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলায়। যাত্রাবাড়ীর সুরুজনগর কলোনির নিজ বাড়িতে থাকতেন। তার বাবার নাম আবুল হাসনাত চৌধুরী।

ধানমন্ডির আইডিয়াল কলেজ থেকে এইচএসসি শেষ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ করেন রায়হান। দেশের বাইরে থেকে করেন এমবিএ। নিটোল মটরসে তার চাকরির বয়স ১২ বছর। তার স্ত্রীর নাম রোমানা সরকার। তাদের সংসারে ১৬ মাস বয়সী এক কন্যা সন্তান রয়েছে।  

বন্ধু রেদওয়ান আতিক আরও বলেন, রায়হান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০০২-০৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিল। সবার সঙ্গে খুবই আন্তরিক ছিল সে। মানুষের সঙ্গে সহজেই মিশে যেতে পারত। অন্যের বিপদে নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে সাহায্য করত। আল্লাহ রায়হানের শিশু মেয়ে, স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের এই শোক সইবার শক্তি দিন। 
 
বুধবার রাতে নামাজে জানাজা শেষে রায়হানকে বায়তুল আমান জামে মসজিদ সংলগ্ন পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। শুক্রবার জুমার নামাজের পর একই মসজিদে এবং গ্রামের বাড়িতে মিলাদের আয়োজন করা হয়েছে।  

আরএইচ