করোনায় আরও ১৫ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৬১৯
করোনায় মৃত এক ব্যক্তির জানাজা/ ফাইল ছবি
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল সাত হাজার ৯৮১ জনে।
এ সময়ে নতুন করে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৬১৯ জন। ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ৩০ হাজার ৮৯০ জনে।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সেখানে বলা হয়েছে, নতুন করে ভাইরাসটি থেকে মুক্ত হয়েছেন ৪৮৭ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন চার লাখ ৭৫ হাজার ৫৬১ জন।
বিজ্ঞাপন
মারা যাওয়াদের মধ্যে ১০ জন পুরুষ এবং ৫ জন নারী। তারা সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৮ জন, চট্টগ্রামে রয়েছেন ৪ জন, রাজশাহীতে ১ জন, রংপুরে ১ জন ও ময়মনসিংহে ১ জন।
মারা যাওয়াদের বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ৩ জন, ৪১ থেকে ৫০ বয়সের মধ্যে ৩ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৬০ বছরের ওপরে ৬ জন রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম তিন জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। এর ঠিক ১০ দিন পর দেশে ভাইরাসটিতে প্রথম মৃত্যু হয়। প্রথম মৃত্যুর তিন দিন পর করোনায় দ্বিতীয় মৃত্যু হয় ২১ মার্চ। এরপর ২৩, ২৪ ও ২৫ মার্চ টানা তিন দিনে তিন জনের মৃত্যু হলেও মার্চ মাসে ভাইরাসটিতে আর কোনো প্রাণহানি ঘটেনি।
১ এপ্রিল মৃত্যু হয় আরেকজনের। মৃত্যুশূন্য থাকে ২ ও ৩ এপ্রিল। ৪ এপ্রিল প্রথমবারের মতো দেশে দুজনের মৃত্যু হয়। এরপর থেকে আর এমন কোনো দিন যায়নি, যেদিন করোনায় দেশে করোনায় কারও মৃত্যু হয়নি। তবে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ১০ জনের নিচে থাকলেও, ১৬ এপ্রিল প্রথমবারের মতো করোনায় দুই সংখ্যার মৃত্যু দেখে বাংলাদেশ। ১৭ এপ্রিল ছাড়িয়ে যায় মানুষের কল্পনাকেও, ওইদিন দেশে করোনায় ১৫ জনের প্রাণহানি হয়।
এরপর ১০ মে ১৪ জনের মৃত্যুর পর আজকের আগ পর্যন্ত করোনায় সিঙ্গেল ডিজিটের কোনো মৃত্যু হয়নি। ভাইরাসটিতে প্রথম ২০-এর অধিক মৃত্যু হয় ১৮ মে, সেদিন দেশে ২১ জনের প্রাণহানি ঘটে। ৩১ মে প্রথমবারের মতো দেশে ৪০ জনের মৃত্যু হয় এ ভাইরাসে। ৫০ ছাড়ায় ১৬ মে, সেদিন মৃত্যু হয় ৫৩ জনের। ৩০ জুন দেশের মানুষ করোনায় একদিনে সর্বোচ্চ প্রাণহানি ঘটে, সেদিন এ ভাইরাস প্রাণ কেড়ে নেয় ৬৪ জনের।
মূলত ২৯ মে থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু একদিনের জন্যও ২০ জনের নিচে নামেনি। প্রায় চার মাস ১০ দিন পর ৯ অক্টোবর করোনায় মৃত্যু ২০-এর নিচে নেমে আসে, সেদিন দেশে ১৭ জনের মৃত্যু হয়।
দেশে এসেছে করোনা টিকা
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২০ লাখ ডোজ টিকা দিয়েছে ভারত।
বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের কাছে এ টিকা হস্তান্তর করেন।
এ সময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম উপস্থিত ছিলেন।
টিকাগুলো বর্তমানে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ঢাকা জেলা ইপিআই স্টোরে মজুত রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখানে এসেছি, এখানে একটি টেম্পারেচার (তাপমাত্রা) কক্ষের মতো গোডাউন রয়েছে। এই গোডাউনটি আমরা সরেজমিনে দেখলাম। সেখানে খুবই সুন্দরভাবে ভ্যাকসিনগুলো সাজিয়ে রাখা হয়েছে। ভ্যাকসিন সরবরাহ ও বিতরণের বিষয়ে জাতীয় একটি প্ল্যান (পরিকল্পনা) হয়েছে। প্ল্যান অনুযায়ী এই ভ্যাকসিনগুলো দেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভ্যাকসিনগুলো কোথায় কোথায় যাবে, সেগুলো সব প্ল্যান করা আছে। আমরা একটি ট্রায়াল রানের (পরীক্ষামূলক) ব্যবস্থা করছি, তবে সেটির তারিখ এখনও নির্ধারণ হয়নি। খুব শিগগিরই একটি তারিখ আমরা পেয়ে যাব। সে অনুযায়ী আমরা ট্রায়াল রানে যাব। এরপর আমরা সারাদেশে এই ভ্যাকসিন বিতরণ করা হবে।’
এফআর/এমএইচএস