সিন্ডিকেটের থাবায় লোকসানে পোল্ট্রি খাত
দেশের সিংহভাগ মাংসের চাহিদা পূরণ করছে পোল্ট্রি শিল্প। এ শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় সোয়া কোটি মানুষ জড়িত। কিন্তু এ শিল্পের অন্যতম কাঁচামাল সয়ামিলের দাম সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে বাচ্চার দামও বেড়েছে কয়েকগুণ। কিন্তু ডিম ও মাংসের দাম খামারি পর্যায়ে সেভাবে বাড়েনি।
এ কারণে দেশের লাখ লাখ প্রান্তিক খামারিরা কোটি কোটি টাকা লোকসানে পড়েছেন। এর থেকে মুক্তি পেতে সরকারের কাছে ১১টি জাতীয় দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত খামারিরা।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (৯ অক্টোবর) রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) হল রুমে বাংলাদেশ পোল্ট্রি শিল্প ফোরাম আয়োজিত প্রান্তিক খামারি সভায় পোল্ট্রি শিল্পের উদ্যোক্তারা এসব দাবি জানান।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি শিল্প ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা এবং বাংলাদেশ এসএমই ফোরামের সভাপতি চাষি মামুন অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের অতিরিক্ত সচিব কৃষিবিদ ড. শেখ মহ. রেজাউল ইসলাম। প্রধান বক্তা ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ্য বিজ্ঞানী ড. মো. লতিফুল বারী এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম।
বিজ্ঞাপন
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, পোল্ট্রি শিল্প সম্ভাবনাময় একটি খাত। এ খাতের পেছনে যারা কাজ করে যাচ্ছেন, আজ তারাই চরম আর্থিক সংকটে। লোকসান দিতে দিতে অনেক উদ্যোক্তা খামার বন্ধ করে চলে যাচ্ছেন।
বক্তারা অতিদ্রুত লোকসান কমানোর পাশাপাশি এ খাতের উন্নয়নে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। একই সঙ্গে সুস্থ ও সুন্দর ব্যবস্থাপনার জন্য এ খাতের জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছেন।
সভায় উত্থাপিত দাবিগুলো হচ্ছে- পোল্ট্রি ফিড ও বাচ্চার অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি বন্ধ করতে হবে। উৎপাদিত মুরগি ও ডিমের মূল্য নির্ধারণে খামারিদের সুযোগ দিতে হবে। সহজ শর্তে ব্যাংক লোন ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করতে হবে। পোল্ট্রি শিল্পের কাঁচামাল, ওষুধ, ভ্যাকসিন এবং খামারিদের ভ্যাট/ট্যাক্স মওকুফ করতে হবে।
আরও রয়েছে- পোল্ট্রি বান্ধব বাজেটে ও এ খাতের উন্নয়নে বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে। এ শিল্পের অন্যতম কাঁচামাল সয়ামিল রফতানি বন্ধ করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদি নীতিমালা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন করতে হবে। এ খাতকে সিন্ডিকেট মুক্ত করতে হবে। খামারিদের আর্থিক ও জীবনের নিরাপত্তায় সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ নির্দেশনা দিতে হবে। দেশের আট বিভাগে পোল্ট্রি শিল্প পার্ক প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং খামারিদের জন্য বিশেষ বিমা চালু করতে হবে।
পোল্ট্রি শিল্প ফোরামের দফতর সমন্বয়কারী আমিনুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন খামারি বোরহানউদ্দীন, আব্দুর রহিম, লোটাস পারভেজ, মানিক শেখ, সুজন সরকার, তাহমিদ হাসান, মাসুমা খানম প্রমুখ।
এসআই/এমএইচএস