জনগণের জীবন ও জীবিকার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার বিষয় বিবেচনায় নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণসহ ৭ দফা সুপারিশ করেছে খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ। সোমবার (১৮ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এসব সুপারিশ করা হয়।

অন্য সুপারিশগুলো হচ্ছে : দরিদ্রদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে আরও বেশি বরাদ্দ প্রদান করা ও দেশব্যাপী বেশি করে ওএমএস কার্যক্রম পরিচালনা এবং দুস্থ জনগোষ্ঠীর জন্য সরাসরি খাদ্য সহায়তা প্রদান করা; মোটা চালসহ সকল খাদ্য-দ্রব্যের ঊর্ধ্বগতি কমাতে বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা; দেশের সকল হাসপাতালসমূহে কার্যকর চিকিৎসা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বেড সংখ্যা বৃদ্ধিসহ অক্সিজেন ও আইসিইউয়ের ব্যবস্থা, টেকনিশিয়ানসহ প্রয়োজনীয় জনবলের জন্য বাজেট বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিচালনায় যথাযথ মনিটরিং ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা; চলতি অর্থবছরের মধ্যে কমপক্ষে ৮০ শতাংশ মানুষের ভ্যাকসিন নিশ্চিত করার জন্য অর্থ বরাদ্দসহ জরুরি উদ্যোগ গ্রহণ করা; কৃষকদের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য প্রণোদনা, কৃষকের পণ্যের বাজারজাতকরণ ও ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে অবিলম্বে ‘মূল্য কমিশন’ গঠন করা; ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব নিরসনে যুব সমাজের কর্মসংস্থানের জন্য বিশেষ পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা এবং সরকারি সহায়তার সঠিক উপকারভোগী চিহ্নিত করার লক্ষ্যে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ডাটাবেজ তৈরি করতে জরুরি উদ্যোগ গ্রহণ করা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, করোনার আগে দেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ছিল ৩ কোটি ৫৫ লাখ, এর মধ্যে অতি দরিদ্রের সংখ্যা প্রায় ২ কোটি। ২০২০ সালে ‘খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ’ কর্তৃক শুধুমাত্র খাদ্য ও পুষ্টি গ্রহণের মানদণ্ডের ভিত্তিতে জরিপ অনুযায়ী দরিদ্র মানুষের হার বৃদ্ধি পেয়েছে ৩০ শতাংশ। বর্তমানে এ সংখ্যা  ৫ কোটির উপরে। পরবর্তীতে ২০২১ সালে পিপিআরসি ও বিআইজিডির জরিপ অনুযায়ী দারিদ্র্যের হার বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৪৩ শতাংশ।

তারা আরও বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) বলছে, করোনা মহামারির কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে তরুণ প্রজন্ম। ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে ২৪.৮ শতাংশই বেকার হয়েছে। করোনার কারণে তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার দ্বিগুণ হয়েছে। আইএলওর হিসাবে, বাংলাদেশে করোনায় ১৬ লাখ ৭৫ হাজার তরুণ-তরুণী কাজ হারিয়েছে। পুনরায় করোনা সংক্রমণ হলে তুলনামূলকভাবে নিরাপদ কৃষিখাতে খাদ্যসহ বিভিন্ন উৎপাদন এবং কৃষক ও খামারিদের খাদ্য ও জীবিকা উভয় ক্ষেত্রে সংকটের সৃষ্টি হতে পারে। জীবিকার সংকট মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি না মানার ক্ষেত্রে বেপরোয়া করে তুলছে, যা উদ্বেগজনক।

মানববন্ধনে বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন, বিসিএইচআরডি, নারীমৈত্রী, ইয়ুথ এসেম্বলি, ইয়ুথ এগেনেস্ট হাঙ্গার, ওয়েভ ফাউন্ডেশন, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস, বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এমএইচএন/এসকেডি