পোল্যান্ডে পাঠানোর কথা বলে ভারতে পাচারের অভিযোগে ফেনীর দাগনভুঁঞা থেকে মানবপাচারকারী চক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

র‌্যাব-৩ এর একটি বিশেষ দল শনিবার (২৩ জানুয়ারি) দিনগত রাতে ফেনী জেলার দাগনভুঁঞা থানাধীন জগতপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করে।

আটকরা হলেন- মো. মোবারক উল্লাহ (৩৩) ও মো. সাইফুল ইসলাম (৪২)। এসময় মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যদের কাছ থেকে ২টি পাসপোর্ট জব্দ করা হয়।

র‌্যাব-৩ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সহকারী পুলিশ সুপার ফারজানা হক জানান, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের গোলাম মাওলা (৭৮) অভিযোগ করেন, মোবারক উল্লাহ ও সাইফুল ইসলাম তার ছেলেকে উচ্চ বেতনে ৮ ঘণ্টা ডিউটি, থাকা খাওয়া ফ্রি এবং দু’বছর পর প্লেন ভাড়া কোম্পানি দেবে বলে পোল্যান্ডে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে খরচ বাবদ ৫ লাখ টাকা চায়।

প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে নগদে ও ব্যাংকের মাধ্যমে দুই দফায় চার লাখ টাকা দেন তিনি। কিন্তু চক্রটি গোলাম মাওলার ছেলেকে পোল্যান্ডে না পাঠিয়ে কালক্ষেপণ করতে থাকে। কিছুদিন পরে ওনার ছেলেকে হাঙ্গেরি পাঠাবে এবং পরে মালদোভা পাঠানোর কথা বলে টালবাহানা করে। একপর্যায়ে ক্রোয়েশিয়ার ভিসা লাগানোর কথা বলে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে আরও ৫০ হাজার টাকা নেয়।

এর মধ্যে তারা কৌশলে ইন্ডিগো এয়ারের প্লেনে করে ভারতে নিয়ে আটক করে রাখে গোলাম মাওলার ছেলেকে। তারপর তারা আরও সাড়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে ছেলেকে বিক্রি করে দেবে বলে হুমকিও দেয়।

গোলাম মাওলার অভিযোগের ভিত্তিতে মোবারক উল্লাহ ও সাইফুল ইসলামকে আটক করে র‌্যাব-৩ এর একটি দল।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা জানায়, তারা মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে ক্রোয়েশিয়ায় পাচারের উদ্দেশে গোলাম মাওলার ছেলেকে ভারতে পাচার করে। তারা দীর্ঘদিন ধরে বিদেশগমনেচ্ছু যুবকদের উন্নত জীবন-যাপনের প্রলোভন দেখিয়ে নগদ টাকা আত্মসাৎ করে আসছে। তাদের সঙ্গে বিদেশে অবস্থান করা মানবপাচারকারী চক্রের যোগাযোগ রয়েছে বলে স্বীকার করেছে।

তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে বলে জানান র‌্যাব-৩ কর্মকর্তা ফারজানা হক।

জেইউ/জেডএস