প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি, আর্থিক ও ভৌত অগ্রগতি সমান, বার বার সময় বাড়ানোসহ উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়মে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি। এসব অনিয়ম নিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়কে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেছেন কমিটির সদস্যরা।

তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মন্ত্রণালয় থেকে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। পরে সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে আগামী এক মাসের মধ্যে সার্বিক বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এসব বিষয়ে  আলোচনা হয়। বৈঠকে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের অধীনস্থ ঢাকা, সিলেট, ময়মনসিংহ ও গোপালগঞ্জ জোন এবং সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের চলমান প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়।

জানা গেছে, বৈঠকের বড় অংশে সড়ক বিভাগের চলমান প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় প্রকল্প কেন সময়মত বাস্তবায়ন হয় না, বার বার কেন সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়, বাস্তবে হওয়ার কথা না থাকলেও প্রকল্পের আর্থিক ও ভৌত অগ্রগতি কেন সমান হয়েছে তার ব্যাখ্যা চাওয়া হয় কমিটির পক্ষ থেকে। এ সময় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাদের মতো যুক্তি দিলে কমিটি তাতে সন্তুষ্ট হয়নি। এ সময় কয়েকটি প্রকল্পে ব্যয় না বাড়িয়ে মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে বলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। অবশ্য কমিটি ব্যয় না বাড়িয়ে মেয়াদ বাড়ানোকেও এক ধরনের অনিয়ম বলে উল্লেখ করে।

এ বিষয়ে কমিটির এক সদস্য বলেন, বুঝলাম ব্যয় বাড়ছে না। কিন্তু প্রকল্প সময়মত শেষ না হওয়ায় জনগণ তো সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছে। প্রকল্প শেষ না হওয়ার কারণে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।  

জানতে চাইলে কমিটির সভাপতি আব্দুস শহীদ বলেন, আমরা সড়কের চারটি জোন নিয়ে আলোচনা করেছি। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে কিন্তু কাজ শেষ হয়নি। ওই কাজ কবে শেষ হবে সেটাও তারা জানাতে পারেনি।

তিনি বলেন, আমাদের কাছে যে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়েছে সেখানে দেখা গেছে প্রকল্পের আর্থিক ও বাস্তব অগ্রগতি সমান। কিন্তু কোনো ভাবেই সমান হওয়ার কথা নয়। এক শতাংশ হলেও তো পার্থক্য থাকবে। কোথাও আর্থিক অগ্রগতি বেশি কম। এসব বিষয়ে তারা যুক্তি দিতে পারেনি। আমাদের অনেক প্রশ্নের তারা সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেনি। কোথায় কী অনিয়ম বা সমস্যা হয় তার বিষয়ে আমরা এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলেছি।

আপনারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উনারা শিক্ষিত মানুষ। আমরা তাদের অশ্রাব্য ভাষায় কিছু বলিনি। তবে, এটা বলেছি যে আপনারা মেধা কাজে লাগিয়ে তামাশা করছেন।

সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে সড়কের ঢাকা জোনের অসমাপ্ত ৯টি প্রকল্পের সময় বৃদ্ধির কারণ ও ব্যাখ্যাসহ প্রতিবেদন কমিটির কাছে পাঠানোর সুপারিশ করা হয়। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী ইন্টারসেকশন থেকে মাওয়া পর্যন্ত এবং পাচ্চর-ভাঙ্গা প্রকল্পে কাজ শেষ না হওয়ার কারণ তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠানোর সুপারিশ করা হয়।

কমিটির সভাপতি মো. আব্দুস শহীদের সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন কমিটির সদস্য চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন, এ বি তাজুল ইসলাম, আহসান আদেলুর রহমান, ওয়াসিকা আয়শা খান, খাদিজাতুল আনোয়ার।

এইউএ/এসকেডি