স্টার্টআপদের নিয়ে প্রতিযোগিতার সবচেয়ে বড় ইভেন্ট ‘বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট (বিগ) ২০২১’তে বিজয়ী হয়েছে ‘ওপেনরিফ্যাক্টরি’। এ জয়ে অনুদান হিসেবে তারা এক লাখ ইউএস ডলার পেয়েছে।

শনিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের মাল্টিপারপাস অডিটোরিয়ামে অ্যাওয়ার্ড বিতরণী অনুষ্ঠানে তাদের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতায় বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, এ আয়োজনের অন্যতম লক্ষ্য ছিল তরুণ উদ্যোক্তা অর্থাৎ স্টার্টআপদের উদ্ভাবনী ধারণাকে উৎসাহিত করে দেশে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা। আন্তর্জাতিক এই আয়োজনে ১৪২টি দেশে ক্যাম্পেইন শেষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৫৭টি দেশ থেকে প্রাথমিক পর্যায়ে ৭ হাজারের বেশি স্টার্টআপ ও উদ্ভাবক এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করে।

এছাড়া অনুষ্ঠানে দেশীয় স্টার্টআপদের নিয়ে অনুষ্ঠিত রিয়েলিটি শো থেকে নির্বাচিত ২৬টি এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সেরা ১০টি স্টার্টআপ অর্থাৎ দেশি-বিদেশি নির্বাচিত মোট ৩৬টি স্টার্টআপের প্রত্যেককেই ১০ লাখ টাকা করে মোট ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকার অনুদান দেওয়া হয়।

অ্যাওয়ার্ড বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) নির্বাহী পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব ড. মো. আব্দুল মান্নান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইডিয়া প্রকল্পের পরিচালক ও যু্গ্মসচিব মো. আব্দুর রাকিব।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মুজিব জন্মশতবর্ষে “বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট ২০২১” আয়োজনে প্রাথমিক পর্যায়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৫৭টি দেশ থেকে ৭ হাজারের বেশি উদ্যোক্তা, উদ্ভাবক ও স্টার্টআপ আবেদন করে। যেখান থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ৫৬টি দেশ থেকে মোট ২৫৫টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এরপর দুই দফায় বাছাই শেষে নির্বাচন করা হয় সেরা ১০টি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের স্টার্টআপ। যারা সরাসরি অংশ নেয় গ্র্যান্ড ফিনালেতে। অপরদিকে, দেশিয় পর্যায়ে স্টার্টআপ বাছাই হয় প্রাথমিকভাবে দুই দফায়।

প্রথম পর্যায়ে ২৮ জন বিচারক ৫টি স্ক্রিনিং বোর্ডের মাধ্যমে বাছাই করেন ২৮৬টি দেশীয় স্টার্টআপ। সরকারি-বেসরকারি ৩৫ জন অভিজ্ঞ বিচারক ৬টি প্যানেলে বিভক্ত হয়ে এই স্টার্টআপগুলো থেকে বেছে নেন সেরা ৬৫টি স্টার্টআপ। যারা ৬ দিনব্যাপী অনলাইন বুট ক্যাম্পে অংশ নেওয়ার সুযোগ পায়।

বুট ক্যাম্পে গ্রুমিং শেষে এই ৬৫টি স্টার্টআপ নিয়েই শুরু হয় ১৩ পর্বের টিভি রিয়েলিটি শো। এ পর্বে প্রতিযোগীরা মুখোমুখি হন দেশের প্রতিষ্ঠিত বিজনেস আইকনদের। যারা বিচারক হিসেবে উপস্থিত থেকে বাছাইকরা ৬৫ স্টার্টআপ থেকে ২৬টি স্টার্টআপ নির্বাচন করেন। রিয়েলিটি শো থেকে নির্বাচিত ২৬টি দেশীয় স্টার্টআপ, আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সেরা ১০টি স্টার্টআপ এবং আইডিয়া প্রকল্পের পোর্টফোলিও স্টার্টআপের সেরা ১০টিসহ মোট ৪৬টি স্টার্টআপকে নিয়ে হয় চূড়ান্ত বাছাই প্রক্রিয়া।

বিচারকদের চূড়ান্ত বাছাই শেষে সেরাদের সেরা হিসেবে ‘ওপেনরিফ্যাক্টরি’কে বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্টের ‘ওয়ান বিগ উইনার ২০২১’ হিসেবে এক লাখ মার্কিন ডলার অনুদান প্রদানের জন্য বিজয়ী হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয়।

রিয়েলিটি শো থেকে সেরা ২৬ স্টার্টআপ : ওপেনরিফ্যাক্টরি, টিঙ্কার’স টেকনোলজিস লিমিটেড, বণ্টন কানেক্ট লিমিটেড, র‍্যাডএসিস্ট, বইঘর ট্রেডিং কেয়ার, অলওয়েল বিডি লিমিটেড, ল্যান্ডনক লিমিটেড, ইনোভেইস টেকনোলজিস, লাইফস্প্রিং কন্সালটেন্সি লিমিটেড, আইডিয়া থ্রি ডি সলিউশনস, ক্যাপ্টেন আর্থ- বি দ্যা চেইঞ্জ, আপস্কিল, সাইকিওর অর্গানাইজেশন, প্লাস্টাইল, ব্রেইলি টেক লিমিটেড, ইনক্লুশন এক্স, স্মার্ট হোয়াইট কেইন, ডিঙ্গি টেকনোলজিস লিমিটেড, গোস্ট কিচেন বাংলাদেশ লিমিটেড, অ্যান্টস এরিয়াল সিস্টেমস লিমিটেড, আলো, সাইনটিকো লিমিটেড, খেলবেই বাংলাদেশ, জোবাইক, অনলাইন সহপাঠী, রোবোল্যাব। 

আন্তর্জাতিক সেরা ১০টি স্টার্টআপ : থার্মো নর্থ, মাই ক্যাশ মানি পিটিই লিমিটেড, এগ্রোভিজিও, ইঙ্ক স্পায়ার্ড, ডব্লিউটিম, সোসো কেয়ার, গ্র্যান্ট মাস্টার, বায়ো মেক, ইভরেকা, কেয়ার ফর্ম ল্যাবস প্রাইভেট লিমিটেড। 

আইডিয়া প্রকল্পের সেরা ১০টি স্টার্টআপ : অল্টারইয়ুথ, অক্সিজেট, ব্লাডম্যান, ভূমিজো, জাহাজী লিমিটেড, অ্যাডভান্সড ভেইকেল সিকিউরিপিট সিস্টেমস (বাইক লক), দ্যা টু আওয়ারস্ জব, গারবেজম্যান লিমিটেড, অভিযাত্রিক, স্বাধীন মিউজিক লিমিটেড। 

একে/এইচকে