রাসেলের ছুটি হলো চিরতরে
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নতুন ভবনের পেছনে মৃত পড়ে থাকা যুবকের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম মনির হোসেন রাসেল (২৯)। তিনি নতুন ভবনের ৫০২ নম্বর ওয়ার্ডের ৩৭ নম্বর বেডে নিউরো মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাসেল তার অসুস্থতা নিয়ে ছিলেন উদ্বিগ্ন, হাসপাতাল থেকে ছুটির জন্য ছিলেন উদগ্রীব।
বিজ্ঞাপন
শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ফারুক আলী মন্ডল ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকালে আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। প্রথমে আমরা তার নাম-পরিচয় পাইনি। পরে আমরা তার পরিচয় জানতে পারি। তিনি নতুন ভবনের ৫ তলায় নিউরো মেডিসিন বিভাগে ৫০২ নম্বর ওয়ার্ডের ৩৭ নম্বর বেডে ভর্তি ছিলেন। হাসপাতালে তার সাথে তার মা রাশেদা বেগম থাকেন। তিনি তার ছেলেকে শনাক্ত করেন।
ফারুক আলী আরও বলেন, রাসেলের মা রাশেদা বেগম আমাদের জানান, তিনি গত অক্টোবর মাসের ২২ তারিখে এখানে ভর্তি হন। কোমরে ব্যথার কারণে হাঁটতে পারতেন না। এ নিয়ে তিনি হতাশায় থাকতেন। আজ সকালের পর তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তার দু’টি জমজ মেয়ে সন্তান আছে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন : মা আমি আর বাঁচব না
পুলিশ আরও জানায়, তার দুলাভাই ইয়াকুব জানান, দুই বছর আগে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে বিয়ার ও স্পিরিট মিশিয়ে খেয়েছিলেন রাসেল। ওই ঘটনায় তার সাথে থাকা দুজন মারা যান। এরপর থেকে তিনি মানসিক সমস্যা এবং কোমরের সমস্যায় ভুগছিলেন। এ কারণে তাকে প্রায়ই হাসপাতালে থাকতে হয়।
এসআই ফারুক বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি ভবনের যে কোনো তলা থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। ঘটনাস্থলে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ এসে নমুনা সংগ্রহ করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢামেক মর্গে পাঠানো হয়েছে।
রাসেলের পাশের বেডের রোগীর স্বজন নিশি ঢাকা পোস্টকে বলেন, সে তার কোমর ব্যথায় হাঁটতে পারত না। এই নিয়ে সে হতাশায় থাকত। সবাই হাসপাতাল থেকে ছুটি নিয়ে চলে যায়, সে যেতে পারত না। কয়েকদিন আগে তার স্ত্রী তার দুই মেয়েকে নিয়ে রাসেলের সাথে দেখা করতে এসেছিল। গতকাল রাসেল আমাকে বলেছিল, আপনারা কাল সকালে চলে যাবেন, না? আমি আপনাদের আগে চলে যাব। আমরা এটা বুঝতে পারিনি সে কোথায় চলে যাওয়ার কথা বলেছিল। আজ ঠিকই সে একবারে ছুটি নিয়ে চলে গেল!
এসএএ/এনএফ/জেএস