র‍্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপন করতে কোনো বাধা নেই। তবে কাউকে বিরক্ত বা বিব্রত করে তা উদযাপন করা যাবে না। আর যদি কেউ থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপনের নামে নাগরিকদের বিরক্ত ও বিব্রত করে তাহলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) রাতে গুলশান-২ নম্বর চত্বরে থার্টি ফাস্ট নাইটের নিরাপত্তা পরিস্থিতি পরিদর্শন শেষে  তিনি এ কথা বলেন।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা থার্টি ফার্স্ট নাইটের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে কাজ করছি। সবার সঙ্গে সমন্বয় করে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা আইন-শৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণে একযোগে কাজ করছি। থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে র‍্যাবের গোয়েন্দা ও আভিযানিক দল প্রস্তুত রয়েছে। আজ রাতে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন র‍্যাবের বিভিন্ন ব্যাটালিয়নের সদস্যদের পোশাকে এবং সাদা পোশাকে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত করা হয়েছে। এছাড়া আমাদের সাইবার মনিটরিং টিম সাইবার ওয়ার্ল্ড এ তাদের নজরদারি অব্যাহত রেখেছে। ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান এবং কূটনৈতিক এলাকায় অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা চেক পোস্ট বসিয়েছি। চেকপোস্টে প্রয়োজন মনে হলে তল্লাশি করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ভিআইপি ও ভিভিআইপিদের নিরাপত্তার এবং কূটনৈতিক এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের টহল টিমসহ গোয়েন্দা দল রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যেন কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে সেজন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা বনানী গুলশান ও বারিধারা এলাকার নাগরিকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুশৃঙ্খল রাখতে তাদের সহযোগিতা কামনা করছি। আমরা আশা করব নতুন বছর উদযাপনের যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সবাই সেই সকল নির্দেশনা মেনে উদযাপন করবেন। কোনো ধরনের উশৃংখলতা বা মাদকাসক্ত হয়ে কোনো ধরনের উশৃংখলতা করলে তা প্রতিরোধ করতে সচেষ্ট রয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করব কেউ উচ্চস্বরে হর্ন বাজিয়ে নাগরিকদের বিরক্ত ও বিব্রত করার চেষ্টা করবেন না। যদি কেউ করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমাদের টিম প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া অনেককে দেখা যায় দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে মানুষকে বিরক্ত করে তাদের বিরুদ্ধেও আমরা কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব। কেউ যেন নারীদের ইভটিজিং করতে না পারে সেজন্য আমাদের সদস্যদের নির্দেশনা দেওয়া আছে।

র‍্যাব ডিজি বলেন, এখন পর্যন্ত জঙ্গি হামলার বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো ধরনের নেতিবাচক তথ্য নেই। তারপরও যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। যাতে করে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি ঘটলে আমরা মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়। র‍্যাবের হেলিকপ্টার, বোম ডিসপোজাল ইউনিট, ডগ স্কোয়াড ও ক্রাইম সিন ভ্যানসমূহ প্রস্তুত রাখা হয়েছে কৌশলগত স্থানে। যেন যে কোনো প্রয়োজনে পরিস্থিতিতে আমরা ভূমিকা রাখতে সক্ষম হই। এছাড়া যে কোনো বিশৃঙ্খলা পরিবেশ দেখা দিলে আমাদেরকে জানানোর অনুরোধ জানাচ্ছি।

নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে যেসব এলাকার রাস্তা বন্ধ করা হয়েছে সেসব এলাকার নাগরিকদের অসুবিধার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে ডিএমপির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে এবং ট্রাফিক বিভাগ ও কাজ করছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা কিন্তু কোন অনুষ্ঠান করতে বাধা দেইনি। অনুষ্ঠান হবে তবে সুশৃংখলভাবে। এর আগেও থার্টি ফার্স্ট উপলক্ষে অনেক ঘটনা ঘটেছে যেটি আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আনন্দ উচ্ছাস করতে সরকার বা আমরা কখনোই বাধাগ্রস্ত করিনা। আমরা সবাই উচ্ছ্বাস করব কিন্তু আরেক জনকে বিরক্ত বা বিব্রত করে নয়।

নতুন বছরে র‍্যাব কি প্রত্যাশা করছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নতুন বছরে আমরা প্রত্যাশা করছি আমরা যেভাবে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধরে রেখেছি, এভাবে ধরে রাখবো নতুন বছরের। জঙ্গিবাদ সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন, সেই নীতি বাস্তবায়নের র‍্যাবের প্রতিটি সদস্য কাজ করে যাবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

এমএসি/আইএসএইচ