ট্রেনে অর্ধেক যাত্রী : ভেতরে ফিটফাট বাইরে সদরঘাট
স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে ট্রেন/ কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে তোলা ছবি
আবারও করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরতে ১১ দফা বিধিনিষেধ মানতে বলছে সরকার। স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর দেওয়া হয়েছে জোর। এরই ধারাবাহিকতায় অর্ধেক আসনে যাত্রী নিয়ে চলছে ট্রেন। এতে ট্রেনের ভেতরে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্বের চিত্র ‘ফিটফাট’ দেখা গেলেও বাইরের চিত্র যেন ‘সদরঘাট’।
কমলাপুর রেলস্টেশনে ঢুকতেই দেখা গেল- টাঙানো ব্যানারে লেখা, ‘মাস্ক ব্যবহার ব্যতীত স্টেশনে প্রবেশ নিষেধ’। সেই ব্যানারের পাশেই মাস্ক ছাড়া দাঁড়িয়ে আছেন অনেকে। ভেতরে প্রবেশ করে দেখা গেল টিকিটের অপেক্ষায় দীর্ঘ লাইন। সেখানেও গায়ে গা লাগিয়ে দাঁড়িয়ে সবাই। শারীরিক দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই টিকিট কিনে ফিরছেন যাত্রীরা।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
কমিউনিটি ট্রেনের টিকিটের জন্য অপেক্ষা করছিলেন আশরাফ আলী। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, গাজীপুর যাব, টিকিটের জন্য অপেক্ষা করছি। আধা ঘণ্টা দাঁড়ানোর পর মাইকে জানাল টিকিট নেই। কারণ, ধারণ ক্ষমতার অর্ধেকের বেশি টিকিট দেওয়া হবে না।
বিজ্ঞাপন
ক্ষোভ প্রকাশ করে টিকিট না-পাওয়া এই যাত্রী বলেন, কী বলব বলেন? এতক্ষণ দাঁড় করিয়ে রেখে বলছে টিকিট নেই। আসলে আমাদের টিকিট দেবে না, গোপনে ঠিকই বেশি দামে বিক্রি করবে।
এদিকে টিকিট কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা এক কর্মী জানান, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আজকে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেকের বেশি টিকিট দেওয়া নিষেধ। এছাড়া স্ট্যান্ডিং টিকিটে যাত্রী বহন করা যাবে না। সব মিলিয়ে আজ স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অর্ধেকের কম টিকিট বিক্রি করেছি। তাই অনেকে টিকিট পাবে না এটাই স্বাভাবিক।
স্টেশনে ঢুকতে স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা বলা হলেও অনেকে তা মানছে না- এমন অভিযোগের উত্তরে দারোয়ান আব্দুর সাত্তার বলেন, মাস্ক ছাড়া কাউকে স্টেশনে ঢুকছে দেওয়া হচ্ছে না। মুখে মাস্ক না থাকলে কাউন্টারে দায়িত্বরত কর্মকর্তারাও টিকিট বিক্রি করছেন না। এখন কেউ যদি ভিতরে ঢুকে মাস্ক খুলে ফেলে তাহলে কী করার আছে? তারপরও আমরা স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনে কঠোর অবস্থায় আছি। তবে মানুষ যদি নিজে সচেতন না হয় তাহলে এটি বাস্তবায়ন করা কঠিন।
টিকিট কাউন্টার ও প্লাটফর্মে স্বাস্থ্যবিধি ও যাত্রীদের সামাজিক দূরত্বের বালাই দেখা না গেলেও ট্রেনের ভেতরে ভিড় দেখা যায়নি। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ভ্রমণ করতে হচ্ছে ট্রেনে। ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নিয়েই চলাচল করছে ট্রেন। যাত্রীরা তাদের পাশের সিটটি খালি রেখেই বসেছেন।
উল্লেখ্য, যাত্রীদের সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণে গত ১২ জানুয়ারি থেকে আন্তঃনগর ট্রেনে মোট আসন সংখ্যার অর্ধেক টিকিট বিক্রি শুরু হয়। হ্রাসকৃত টিকিটের ৫০ শতাংশ মোবাইল অ্যাপ বা অনলাইনে এবং বাকিটা কাউন্টার থেকে কেনা যাবে বলে জানায় রেল কর্তৃপক্ষ।
এসআই/এইচকে