দেশের চলচ্চিত্র ও সাহিত্যে অনন্য এক প্রতিভার নাম জহির রায়হান। স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয় লাভের পর ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি নিখোঁজ হোন বরণীয় এই বুদ্ধিজীবী। আজ তার হারিয়ে যাওয়ার ৫০ বছর।

দিবসটি উপলক্ষে আজ (২৯ জানুয়ারি) বিকেল ৫টায় ঢাকার লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি স্কুল অ্যান্ড কলেজে কথা সাহিত্যিক, মুক্তিযোদ্ধা চলচ্চিত্র নির্মাতা ‘জহির রায়হানের হারিয়ে যাবার পঞ্চাশ বছর’ শিরোনামে এক আলোচনা ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। এতে অংশগ্রহণ করবেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. কামালউদ্দিন আহমেদ, নাট্যজন শংকর সাঁওজাল, শিক্ষাবিদ আকমল হোসেন, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রদীপ ঘোষ।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের মাধ্যমে অপহৃত হন তার ভাই আরেক বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সার। যুদ্ধের শেষে ভাইকে খুঁজতে গিয়েই নিখোঁজ হন জহির রায়হান।

১৯৭২ সালের ২৮ জানুয়ারি সকালে জহির রায়হানকে ফোন করেন এক ব্যক্তি। ওই ব্যক্তি জহির রায়হানকে জানান, মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনে হাউজিং সেক্টরে আটকে রাখা হয়েছে তার ভাইকে। জহির রায়হান মিরপুর যান। কিন্তু আর ফেরেননি। পরে ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি জহির রায়হানের মৃত্যুদিন হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার, সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা, বুদ্ধিজীবী ও লেখক জহির রায়হান ১৯৩৫ সালের ১৯ আগস্ট ফেনীর মজুপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

১৯৫০ সালে যুগের আলো পত্রিকায় যোগদানের মধ্য দিয়ে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে সম্পৃক্ত হন জহির রায়হান। পরে তিনি খাপছাড়া, যান্ত্রিক, সিনেমা ইত্যাদি পত্রিকাতেও কাজ করেন। ১৯৫৫ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম গল্পগ্রন্থ সূর্যগ্রহণ।

জহির রায়হানের উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো কখনো আসেনি, স্টপ জেনোসাইড, এ স্টেট ইজ বর্ন, জীবন থেকে নেওয়া, কাঁচের দেয়াল ইত্যাদি। তবে জীবন থেকে নেয়া ছবিটি তাকে এদেশের চলচ্চিত্রে অমরত্ব দান করেছে।

সাহিত্য রচনায় শেষ বিকেলের মেয়ে, হাজার বছর ধরে, আরেক ফাল্গুন, বরফ গলা নদী, আর কত দিন, কয়েকটি মৃত্যু, একুশে ফেব্রুয়ারি, তৃষ্ণা ইত্যাদি গল্প-উপন্যাসে আভাস মিলে স্বতন্ত্র আর সাবলীল লেখনীর। তার মধ্যে হাজার বছর ধরে উপন্যাসটিকে বলা হয় জহির রায়হানের অনন্য সৃষ্টি। এটিকে নিয়ে জহির রায়হানের দ্বিতীয় স্ত্রী চিত্রনায়িকা সুচন্দা চলচ্চিত্রও পরিচালনা করেন। ছবিটি বেশ কয়েকটি শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলো।

পিএসডি/এমএইচএস