ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘জাতির পিতার ভাস্কর্য নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে, সেটা কেউ করতে পারবে না। এই দেশে থাকতে হলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মানতে হবে, তাকে স্বীকার করতেই হবে। যারা মানবে না তারা ও তাদের পরিবার এই দেশে থাকতে পারবে না।’

বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের অডিটরিয়ামে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী পুলিশের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে মোট ১৬ জন বীর পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাকে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে আসা বীর পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে কয়েকজন মুক্তিযুদ্ধকালীন তাদের দুঃসাহসিক অভিযানের বর্ণনাসহ বিভিন্ন স্মৃতিচারণ করেন। এ সময় অনেকে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

পুরস্কার নিচ্ছেন পুুলিশ বাহিনীর এক বীর মুক্তিযোদ্ধা

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বীর পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আপনারা বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন। আমরা কথা দিতে পারি, এই স্বাধীনতা রক্ষার জন্য সব ধরনের চেষ্টা আমরা করব। যারা এই স্বাধীনতা নস্যাৎ করার চেষ্টা করবে আমরা জেগে আছি, জাতির ক্রান্তিকালে অবশ্যই তাদের প্রতিহত করা হবে।’

মহানগর পুলিশপ্রধান বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ করেছিল পুলিশ বাহিনী, এটাই আমাদের অহংকার। পুলিশের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগ বুকে ধারণ করে কাজ করলে তাদের আত্মা শান্তি পাবে।’

বীর পুলিশ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল মন্ডল (অব. ডিআইজি) বলেন, ‘বিজয় দিবস, বাংলাদেশের পতাকা, স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধু একই সূত্রে গাঁথা। একটি ছাড়া অন্যটি চলে না। পৃথিবীর অনেক দেশ বাংলাদেশকে চেনে না, কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে ঠিকই চেনে। তার সম্মান আমাদের রক্ষা করতেই হবে।’

বক্তব্য দিচ্ছেন পুুলিশ বাহিনীর এক বীর মুক্তিযোদ্ধা

মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দীন আহমেদ বীর বিক্রম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে অপমান করা মানে বাংলাদেশ, জাতীয় পতাকা, স্বাধীনতা ও সংবিধানকে অপমান করা। বঙ্গবন্ধুর সম্মান রক্ষার জন্য প্রয়োজনে আপনারা ঝাঁপিয়ে পড়বেন। রাজারবাগ থেকেই প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধ গড়ে তুলে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের কয়েকদিন পরেই রাজারবাগে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করা হয়, এটি পুলিশের একটি অর্জন।’

এ সময় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার, উপ-পুলিশ কমিশনারসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনী প্রথম আক্রমণ চালিয়েছিল ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে। আর সেখানেই বাঙালি পুলিশ সদস্যরা প্রথম প্রতিরোধও রচনা করেছিলেন।

জেইউ/এফআর