সিএস রেকর্ড অনুযায়ী বুড়িগঙ্গা নদীর আদি চ্যানেলের সীমানা নির্ধারণ করে স্থায়ী পিলার স্থাপনের দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন। শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।

পরিবেশ বাঁচাও (পবা) আন্দোলন, পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চ, মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্র, দেবীদাস ঘাট সমাজ কল্যাণ সংসদ, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম (নাসফ), পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগ, বিডি ক্লিক, পরিবেশ উন্নয়ন সোসাইটি, ঢাকা যুব ফাউন্ডেশন, জাতীয় সচেতন ফাউন্ডেশন (জাসফা), সচেতন নগরবাসী, পুষ্পসাহা পুকুর রক্ষাকারী কমিটি, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট, পরিষ্কার ঢাকা, গ্রিনফোস, বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল রক্ষায় শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল উদ্ধার (সিএস রেকর্ড অনুযায়ী) ও খনন করতে হবে। বেপরোয়া দখল, ভরাট ও অব্যাহত আগ্রাসনের ফলে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল এখন মৃতপ্রায়। অথচ মহানগরী ঢাকার জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতির জন্য বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হাইকোর্টের সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকলেও ঢাকার প্রাণস্বরূপ বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল পুনরুদ্ধারে বিভিন্ন সময়ে বিচ্ছিন্ন কিছু উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে মাত্র, যা কোনো কাজে আসেনি।

তারা বলেন, ঢাকার পশ্চিমাঞ্চলের বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেল সংলগ্ন মো.পুর, রায়েরবাজার, হাজারীবাগ, কালুনগর, ভাগলপুর, নবাবগঞ্জ, শহীদ নগর, কামালডাঙ্গা, ইসলামবাগসহ ওই এলাকার খালগুলো এখন মরতে বসেছে। ওই সব এলাকায় বর্ষার সময় সামান্য বৃষ্টিতেই ভয়াবহ জলাবদ্ধতার মুখে পড়ে। অধিক বৃষ্টিতে অনেক ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে যায়। 

বক্তারা আরও বলেন, নদী ও জলাশয় ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ থাকার সত্ত্বেও প্রশাসনের চোখের সামনে দখলদাররা মরিয়া হয়ে উঠেছে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলের শেষ স্পন্দনটুকু কেড়ে নেওয়ার জন্য। স্থানীয় জনসাধারণ, মহানগরবাসী, পরিবেশ বিশেষজ্ঞসহ সুশীল সমাজ দখলের এ নোংরা প্রতিযোগিতা বন্ধে সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ দাবি জানাচ্ছে।

এ সময় আয়োজকদের পক্ষ থেকে বেশ কিছু দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে; বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল ভরাট করে নির্মাণ করা কারখানা ও বাড়িঘরের পানি বিদ্যুৎ গ্যাসসহ সকল নাগরিক সুযোগ এখনই বন্ধ করে দেওয়া এবং অনতিবিলম্বে সকল দখল ও ভরাট এবং দূষণমুক্ত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। সিএস রেকর্ড অনুযায়ী বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলের সীমানা নির্ধারণ করে স্থায়ী পিলার স্থাপন করা। বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলে প্রদত্ত ভূমি বরাদ্দসমূহ সরকার কর্তৃক অনতিবিলম্বে বাতিল করা। ব্যক্তি ও সংস্থার নামে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলের রেকর্ডসমূহ আইন বহির্ভূত ঘোষণা করে সেগুলো বাতিল করা। চ্যানেলের ভরাট করা জায়গা খনন করে আদি চ্যানেলের গতি প্রবাহ পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা।

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সোবহানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন ক্লিন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা মোস্তফা কামাল, সাইকেলিস্ট আমিনুল ইসলাম টুকু, পুরান ঢাকা সংগঠনের হাজি রনি, ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশের প্রোগ্রাম প্রধান সৈয়দা অনন্যা রহমান, পরিবেশবাদী সংগঠনের সদস্য ইব্রাহিম হোসেন প্রমুখ।

এএসএস/এসকেডি