যমুনা নদীর ইকোনমিক করিডোর উন্নয়নের জন্য বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এই নদীর ইকোনমিক করিডোর উন্নয়ন আরও আগেই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় রাজনৈতিক নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তা করা সম্ভব হয়নি।

সোমবার (১১ এপ্রিল) রাজধানী রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশের (আইইবি) শহীদ প্রকৌশলী ভবনের কাউন্সিল হলে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির উদ্যোগে ‘যমুনা নদীর ইকোনমিক করিডোর উন্নয়ন : সম্ভাবনা, প্রতিবন্ধকতা এবং কৌশল প্রণয়ন’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, যমুনা নদীর উন্নয়নের করিডোর অনেক আগেই হওয়ার কথা ছিল। এমনকি শাখা নদীগুলোরও করিডোর উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোটের রাজনৈতিক নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। এখন এ উন্নয়ন করিডোর বাস্তবায়ন করতে প্রকৌশলীদের সহযোগিতা লাগবে, একই সঙ্গে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তও লাগবে। 

তিনি বলেন, যে কোনো কানেক্টিভিটি দেশের উন্নয়নের দুয়ার খুলে দেয়। যমুনা নদীর ইকোনমিক করিডোর উন্নয়নের কথা চিন্তা করেই দুই পাশের স্থাপনা গড়ে তোলা হচ্ছে। এই করিডোর শুধু বাংলাদেশের মধ্যে পণ্য পরিবহনে অবদান রাখবে, তা নয়। এই করিডোর বিদেশেও পণ্য পরিবহন করতে সহায়তা করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনায় যমুনা তীরের মানুষের এখন উন্নত জীবন ও জীবিকার স্বপ্ন দেখছে।

পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, যমুনা নদী ঘিরে বাণিজ্য ও শিল্পায়নের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। যমুনা নদীর ইকোনমিক করিডোর উন্নয়ন করতে পারলে রফতানিমুখী শিল্পায়ন গড়ে উঠবে। সেই সম্ভাবনাকে সামনে রেখে যমুনা নদীর ওপর সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প চলমান আছে। 

তিনি বলেন, যমুনার তীরকে অথনৈতিক জোন হিসেবে কাজে লাগাতে না পারা দুঃখজনক। যমুনা নদীর করিডোরকে কীভাবে কাজে লাগানো যায় সে লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এজন্য সরকার নদী শাসন ও নদী রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। বন্যার ঝুঁকি কমানো ও নদীর পানি প্রবাহ বাড়ানো, পলি ব্যবস্থাপনার কাজ চলছে। ১৩ বছর আগেও দেশে নদী ভাঙন কবলিত এলাকা সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে নদী ভাঙন কবলিত এলাকা সাড়ে ৩ হাজার হেক্টরে নিয়ে এসেছে। আরও কয়েক বছর কাজ করলে এক হাজার হেক্টরের নিচে নিয়ে আসা যাবে। যা এক সময় আর থাকবে না।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর বলেন, জাতির পিতা স্বাধীনতার পর নদী ও বন্যা ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দিয়েছিলেন। ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাও পানি ব্যাবস্থাপনা, নদী খনন, পানি নিষ্কাশন ও নদী শাসনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। একশ বছর পরের বাংলাদেশের জন্য তিনি ‘ডেল্টাপ্ল্যান ২১০০’ দিয়েছেন। সুনীল অর্থনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যমুনা করিডোর ঘিরে নেওয়া পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে দেশের অর্থনীতিতে আরও গতির সঞ্চার হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০২১ এর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়েছে, ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশও বাস্তবায়িত হবে।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং উপ-কমিটির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর।

মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন পানি সম্পদ বিশেষজ্ঞ এবং রয়েল মিলিটারি কলেজ, কানাডার সংযুক্ত অধ্যাপক ড. এস এম হাবিবুল্লাহ বাহার। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডর মহাপরিচালক ইঞ্জিনিয়ার ফজলুর রশিদ। 

অনুষ্ঠানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য প্রফেসর ড. মো. হোসেন মনসুরের সভাপতিত্বে সঞ্চালনা করেন, উপকমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার রনক আহসান।

এইউএ/এসএম