১৫টি ‘নামসর্বস্ব’ সংগঠন নিয়ে জোট গঠন করছে ছাত্রদল
বিএনপির ছাত্রসংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ‘নামসর্বস্ব’ ছাত্রসংগঠনগুলোকে নিয়ে জোট গঠন করতে যাচ্ছে বলে গুঞ্জন উঠেছে। বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে এ জোট গঠন করতে যাচ্ছে ছাত্রসংগঠনটি।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ১৫টি ছাত্রসংগঠনকে নিয়ে জোট গঠন করতে ছাত্রদল। তবে এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। প্রশ্ন উঠেছে, ‘নামসর্বস্ব’ এসব ছাত্রসংগঠনকে নিয়ে কী আদৌও আন্দোলন সফল করা যাবে?
বিজ্ঞাপন
সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে কয়েকটি ছাত্রসংগঠনের নেতাদের নিয়ে মতবিনিময় করেন ছাত্রদলের শীর্ষ নেতারা। শুক্রবার ২৯ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) সকাল ১০টায় জোট গঠন হবে। ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্য’ নামে জোটটি তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন বলে জোটের একাধিক শরিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন।
জোটভুক্ত হতে যাচ্ছে যেসব ছাত্রসংগঠন– জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ছাত্র ফেডারেশন, জেএসডি ছাত্রলীগ, নাগরিক ছাত্র ঐক্য, ভাসানী ছাত্র পরিষদ, বিপ্লবী ছাত্র সংহতি, রাষ্ট্র সরকার ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ছাত্র ফোরাম (মন্টু), জাতীয় ছাত্রসমাজ (কাজী জাফর), জাগপা ছাত্রলীগ (রবিউল), গণতান্ত্রিক ছাত্রদল (এনডিপি), জাতীয় ছাত্র সমাজ (বিজেপি, পার্থ), জাগপা ছাত্রলীগ (লুৎফর)।
বিজ্ঞাপন
ছাত্রদলের জোট গঠন নিয়ে রাজনীতি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব বেনামি বা নামসর্বস্ব দল নিয়ে জোট গঠন করে সরকার বিরোধী আন্দোলন সফল করা সম্ভব কি না সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। বামপন্থি দলগুলোর মধ্যে যে বিভেদ, তারা নিজেদের মধ্যেই ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারে না। তারা কীভাবে জোটে অংশ নিয়ে আন্দোলন সফল করবে? আর যেসব নামসর্বস্ব ছাত্রসংগঠন জোটে আসছে, তারা মূলত নিজের আখের গোছাতে আসছে।
আরও পড়ুন
তারা আরও বলেন, ছাত্রদলের মতো প্রতিষ্ঠিত সংগঠন যদি এমন নামসর্বস্ব ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে জোট গঠন করে, তাহলে ছাত্র ও তরুণদের কাছে সংগঠনটি হাসির পাত্র হবে। যেমন ২০২২ সালের জুলাই মাসে বিএনপি বেশ কয়েকটি নামসর্বস্ব দলের সঙ্গে বৈঠক করায় তাচ্ছিল্য করে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছিলেন, নামসর্বস্ব দলের সঙ্গে বৈঠকই বিএনপির রাজনৈতিক সংকটের প্রমাণ। নামসর্বস্ব দলের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি প্রমাণ করেছে যে তারা চরম রাজনৈতিক সংকটে রয়েছে।
এদিকে, ইসলামী শাসনতন্ত্রসহ কয়েকটি ইসলামী সংগঠনকে জোটে নেওয়া হচ্ছে না কারো কারো স্বার্থে। ছাত্রদল ও বিএনপির এক অংশ চাইলেও আরেক অংশ চায় না ইসলামী দলভিত্তিক ছাত্রসংগঠনগুলো তাদের সঙ্গে আসুক।
অন্যদিকে, ছাত্র জোট হলেও ছাত্ররাজনীতির প্রাণকেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জোটের শরিকদের কারোরই কোনো অবস্থান নেই, নেই কোনো কর্মসূচিও। তাদের নিয়ে জোট হলে সফল হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে মত রাজনীতি সংশ্লিষ্টদের। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলও বিষয়টি নিয়ে এখনো কিছু জানে না। তাদের এক প্রকার বাইরে রেখেই জোট গঠনের তৎপরতা চালানো হচ্ছে।
জানতে চাইলে ঢাবি ছাত্রদলের শীর্ষ এক নেতা বলেন, ছাত্র জোট হচ্ছে কিন্তু আমাদের এখানে রাখা হচ্ছে না, বৈঠকে কি হচ্ছে না হচ্ছে আমরা জানি না। ভালো কয়েকটা সংগঠনকেও রাখা হচ্ছে না। এই জোট নিয়ে আমরা সন্দিহান।
জানতে চাইলে ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল বলেন, ছাত্র জোটের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। আমাদের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিষয়টি দেখছেন।
সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বলেন, আমাদের বৈঠকে রাখা হয়নি, তাই বিষয়টি আমাদের জানার বাইরে। সেন্ট্রাল ছাত্রদলের বিষয় এটি, তাই আমরা এ ব্যাপারে কিছু জানি না।
এ বিষয়ে জানতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান ও সাধারণ সম্পাদক সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলকে একাধিকবার কল করেও পাওয়া যায়নি।
/এসএসএইচ/