ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাইয়ের পীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, জাতিসংঘ মানবতার কথা বলে, বিভিন্ন বিষয়ে সুন্দর সুন্দর ভাষার মাধ্যমে কথা বলে। কিন্তু ফিলিস্তিনের মুসলমানদের ওপর নির্যাতন, হত্যায় চুপ থাকা জাতিসংঘের বৃদ্ধাঙ্গুলি আমরা মেনে নিতে পারি না।

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের আগ্রাসনের প্রতিবাদে আজ (মঙ্গলবার) ঢাকার বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরুর পূর্বে বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিকেল ৩টা থেকে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে জমায়েত হতে শুরু করেন দলটির নেতাকর্মীরা।

চরমোনাই পীর বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, তামাম দুনিয়ায় যদি কোনো মুসলমান আক্রান্ত হয় তার পাশে থাকা, প্রতিবাদ করা, তার দুঃখে দুঃখী হওয়া ইমানের অঙ্গ। আজ ফিলিস্তিনে ইসরাইলের আগ্রাসন চলছে। ফিলিস্তিনের ওপর যে জুলুম নির্যাতন চলছে তার প্রতিবাদ যদি আমরা করতে না পারি তা ঈইমানের ঘাটতি হিসেবে প্রমাণিত হয়। 

তিনি বলেন, আজ ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশ দখলদার ডাকাত ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, পক্ষাবলম্বন করেছে। যারা যুগ যুগ ধরে আক্রমন, হত্যা, হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, তাদের পক্ষাবলম্বন করা অত্যন্ত দুঃখজনক।

তিনি বলেন, আমরা মুসলমানরা আজ একত্রিত হবো, মানবতাবাদীরা একত্রিত হবো।  

সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেন, মুসলিম জাগরণ শুরু হয়ে গেছে। ৫১ বছর পরে ফিলিস্তিনিদের জমি উদ্ধারে সোচ্চার হওয়ায় পশ্চিমারা এবং ভারত ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। মুসলমানরা তাদের দখল হওয়া জমি যেকোনোভাবে ফিরিয়ে আনবে ইনশাআল্লাহ। বায়তুল মোকাদ্দাস রক্ষায় আমরা বুকের তাজা রক্ত দিতে প্রস্তুত আছি।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, আমেরিকার সহায়তায় ১৯৪৮ সনে আমেরিকার সহায়তায় জাতিসংঘের প্রস্তাবে ইসরায়েলকে বসত করার জন্য সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এখানে বসতি করে ইসরায়েলি জুলুম চলছে।

রেজাউল করিমের বক্তব্যের পরই বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। এ মিছিলকে কেন্দ্র করে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম ও পল্টন এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। কর্মসূচিকে ঘিরে যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। আনা হয়েছে সাঁজোয়া যান ও এপিসি। 

বক্তব্যে রাখেন যুগ্ম-মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, যুগ্ম মহাসচিব আলহাজ্ব মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা মোহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, আলহাজ্ব কে এম আতিকুর রহমান ও মুফতী দেলাওয়ার হোসাইন সাকী প্রমূখ।

গত শনিবার (৭ অক্টোবর) কোনো পূর্ব সতর্কতা ছাড়া হঠাৎ করে ইসরায়েলে হামলা চালানো শুরু করে হামাস। গত তিনদিন ধরে চলা এ হামলায় এখন পর্যন্ত ৯০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন ৩ হাজারের বেশি মানুষ। ইসরায়েলি সেনা ও বেসামরিকদের হত্যা করা ছাড়াও প্রায় ১৫০ জনকে ধরে গাজা উপত্যকায় নিয়ে এসেছে তারা।

শনিবারের হামলার পর গাজায় নির্বিচারে ও অব্যাহতভাবে বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। আর তাদের এসব বিমান হামলায় নিহত হচ্ছেন অসংখ্য সাধারণ ফিলিস্তিনি। এছাড়া হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে গাজাকে সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ করেছে ইসরায়েল। সেখানে তারা বিদ্যুৎ, পানি ও জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। আর নির্বিচারে ফিলিস্তিনিদের হত্যার কারণে বন্দি ইসরায়েলিদের হত্যার হুমকি দিয়েছে হামাস। 

জেইউ/এনএফ