বাংলাদেশকে আরেকটা ফিলিস্তিন বানিয়ে ফেলেছে আ. লীগ : নুর
আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে আরেকটা ফিলিস্তিন বানিয়ে ফেলেছে মন্তব্য করে গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, এই নব্য ইহুদীদের দালাল থেকে বাংলাদেশের মানুষকে মুক্ত করতে হবে।
বুধবার (১৮ অক্টোবর)রাজধানীর বিজয় নগর পানির ট্যাংকির সামনে এক সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি ও এক দফা দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করে ১২ দলীয় জোট।
বিজ্ঞাপন
নুর বলেন, দেশ স্বাধীনের জন্য যেভাবে বাকশালীদের রুখে দেওয়া হয়েছিল। আজকে এই নব্য বাকশালীদের রুখে দিয়ে গণতন্ত্র ও গণমানুষের অধিকার ফিরে আনতে হবে।
বাকশালী আওয়ামী লীগ দেশটাকে একটা নরকে পরিণত করেছে মন্তব্যে করে নূর বলেন, এই নরক থেকে দেশের মানুষকে মুক্ত করা জন্য, নিজের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য আগামীতে যত লড়াই সংগ্রামের ডাক আসবে, সেই লড়াই সংগ্রামকে সফল করার জন্য আমাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে। শুধুমাত্র বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার জন্য আমরা এই লড়াই করছি না। নিজেদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার জন্য এই লড়াই করছি। প্রতিটি মানুষের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিতে হবে।
বিজ্ঞাপন
দেশে এখন চার মাসের রিজার্ভ রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, দেশ আজকে দেউলিয়ার দ্বারপ্রান্তে, দ্রব্যমূল্যের দাম দাউদাউ করে বাড়ছে। ছয় মাসের ব্যবধানে ৭০ টাকার টাকা চিনি ১৪০ টাকা হয়েছে। প্রত্যেকটি পণ্যের দাম বাড়ছে। আমাদের দাবি একটাই- বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে। এটা কোনো অন্যায় ও অযৌক্তিক দাবি না। বারবার সংবিধানের কথা বলছেন। এই সংবিধানকে ১৭বার সংশোধন করা হয়েছে। দেশের মানুষের প্রয়োজনে আবার সংশোধন করে নির্বাচন করতে হবে।
নুরুল হক নুর বলেন, বিদেশিরা শেখ হাসিনাকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে তোমরা যদি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন না করো তাহলে আমরা বিনিয়োগ ফিরিয়ে নেবো। তোমরা যদি সুষ্ঠু নির্বাচন বন্ধ করো পিস কিপিং(শান্তিরক্ষী) বন্ধ হয়ে যাবে। পোশাক রপ্তানির সবচেয়ে বড় বাজার ইউরোপ-আমেরিকায় ধস নামবে। ৪০ লাখ গার্মেন্টস কর্মী চাকরিহীন হয়ে পড়বে। আর রিজার্ভ আটকে যাবে। তখন ১৯৭৪ সালের মতো দেশে আবারও দুর্ভিক্ষ নেমে আসবে। ১০ পয়সার লবণ ১০৪ টাকা হয়েছিল। আজকের যারা তরুণ তারা দেখেন নাই তাদের সতর্ক করছি। শেখ হাসিনা এই দেশকে দুর্ভিক্ষের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। কাজেই এক দফা দাবি বাস্তবায়নে সর্বাত্মকভাবে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। বিএনপির পাশাপাশি আমরা ছোট ছোট দলগুলো আন্দোলনে আছি।
পুলিশের উদ্দেশ্যে নূর বলেন, সারা বাংলাদেশে ২ লাখ ৩৬ হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য রয়েছে। এর মধ্যে ৫০ থেকে ৬০জন পুলিশ অফিসার অনেক সম্পদের মালিক হয়েছে। তারা অর্থ বিদেশে পাচার করছেন। আর লাখ লাখ পুলিশ সদস্য রয়েছে তাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয় নাই। একজন পুলিশ সদস্যের বেতন ১৬ হাজার টাকা। রিকশাওয়ালার চেয়ে কম। তারা কীভাবে পরিবার পরিচালনা করবে।
তিনি আরও বলেন, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বলবো আজকে আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। দেশকে রক্ষা করা জন্য, ভোটের অধিকার রক্ষার জন্য আমরা যুদ্ধে নেমেছি। দেশে একবার মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। এটা দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ। আমরা পিছু হটবো না। আপনারা যদি ভেবে থাকেন মামলা-হামলা, গ্রেফতার ও নির্যাতন করবেন তাহলে আপনারা আপনাদের নির্মম পরিণতি ডেকে আনবেন। আমাদের মিছিলে যদি আঘাত আসে, তবে পাল্টা আঘাত করে প্রতিরোধ গড়ে তুলবো।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী ১২দলীয় জোট প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল অব. সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম উপস্থিত ছিলেন।
এমআই/এমজে