প্রতীক পেয়ে প্রচারণায় মিতা, নৌকা জেতানোর প্রত্যয়
চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন মাহফুজুর রহমান মিতা। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) রিটার্নিং কার্যালয় থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নৌকা প্রতীক পান তিনি। এরপর নির্বাচনী প্রচারণায় নামেন মিতা। এদিন বিকেলে উপজেলার এনাম নাহার মোড়ে প্রথম পথসভায় বক্তব্য রাখেন তিনি।
এসময় শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও নৌকা প্রতীক জেতানোর প্রত্যয় নিয়ে তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস এমনকি ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতে সন্দ্বীপবাসীর পাশে ছিলাম। করোনা মহামারির সময় কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাবা-সন্তানকে চিনত না, স্ত্রী তার স্বামীকে চিনতেন না এমন সময় আমি দ্বীপের লোকজনের পাশে ছিলাম। জীবনের মায়া ভুলে গিয়েছি। আমার আলাদা কোনো পরিবার নেই। পুরো সন্দ্বীপবাসীকে নিয়ে আমার পরিবার। ভবিষ্যতেও সুখে-দুঃখে দ্বীপবাসীর পাশে থাকতে চাই।
বিজ্ঞাপন
মাহফুজুর রহমান বলেন, আমি প্রতি সপ্তাহে ঢাকা থেকে সন্দ্বীপ এসেছি আপনাদের মনের কথা শুনার জন্য। ব্যবসায়ীরা একেকজন একেক দল করেন। গত দশ বছরে আমি সকল ব্যবসায়ীদের শান্তিতে ব্যবসা করার জন্য ব্যবস্থা করেছি। এই সন্দ্বীপে একসময় অস্ত্রের ঝনঝনানি ছিল। এখন এসব জাদুঘরে চলে গেছে। দ্বীপবাসী ভালো থাকলে আমার প্রয়াত পিতা দ্বীপবন্ধু মোস্তাফিজুর রহমান আত্মা শান্তি পায়। দ্বীপ ভালো থাকলে আমি ভালো থাকি।
তিনি বলেন, আমাদের সন্দ্বীপের মূল সমস্যা নৌ-যাতায়াত। সন্ধ্যার পরে চট্টগ্রামের সঙ্গে সন্দ্বীপের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আমি নির্বাচিত হলে সি অ্যাম্বুলেন্স ও ২৪ ঘণ্টা নৌ-যাতায়াতের ব্যবস্থা করব।
বিজ্ঞাপন
মাহফুজুর রহমান বলেন, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। মানুষ নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে। সকলের প্রতি আমার আহ্বান থাকবে আচরণবিধি মেনে প্রচারণা চালাতে হবে। আমার কারও প্রতি কোনো ধরনের ক্ষোভ নেই। ষড়যন্ত্র যত হোক, আমার বিশ্বাস দ্বীপবাসী শেখ হাসিনার নৌকা প্রতীককে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।
এসময় নেতাকর্মীদের সেলফি নিয়ে ব্যস্ত না থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরার জন্য আহ্বান জানান মাহফুজুর রহমান মিতা।
নির্বাচনী পথসভায় উপস্থিত ছিলেন সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাউদ্দিন বেদর ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাইনউদ্দিন মিশন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম-৩ আসনে মাহফুজুর রহমান ছাড়াও প্রার্থী হয়েছেন আরও ৭ জন। তাদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরী পেয়েছেন ঈগল, জাতীয় পার্টির এম. এ. ছালাম পেয়েছেন লাঙ্গল, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের নূরুল আক্তার পেয়েছেন মশাল, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মুহাম্মদ উল্যাহ খাঁন পেয়েছেন মোমবাতি, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মুহাম্মদ নুরুল আনোয়ার পেয়েছেন একতারা, ন্যাশনাল পিপসল পার্টির মোহাম্মদ মোকতাদের আজাদ খান পেয়েছেন আম এবং ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মো. আব্দুর রহীম পেয়েছেন চেয়ার প্রতীক।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ৩০ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই হয়েছে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ছিল ১৭ ডিসেম্বর। এরপর আজ (সোমবার) প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সংবিধান অনুযায়ী সংসদের মেয়াদ পূর্তির আগের ৯০ দিনের মধ্যে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন করতে হয়। চলতি সংসদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছরের ২৯ জানুয়ারি। এর আগের ৯০ দিনের মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা আছে।
এমআর/এমএ