বাঁশখালীতে নিহত শ্রমিকদের আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি
চট্টগ্রামের বাঁশখালিতে শ্রমিক হত্যার জন্য দায়ী কর্তৃপক্ষ, পুলিশ ও নিরাপত্তারক্ষীদের শাস্তি এবং নিহত শ্রমিকদের আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। রোববার (১৮ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এসব দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, করোনা সংক্রমণরোধে সরকার ঘোষিত লকডাউনে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমজীবী মানুষরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। আর প্রাতিষ্ঠানিক খাতের কর্মরত শ্রমিকেরা প্রাপ্ত মজুরি দিয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যয় ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে যন্ত্রণার মধ্যে জীবন-যাপন করছে। এই শ্রমজীবী মানুষদের রক্ষার দায়িত্ব সরকার নেয়নি। অথচ সরকার এসআলম গ্রুপের ঋণের ৩ হাজার কোটি টাকা মাফ করে দিয়েছে। প্রণোদনার নামে মালিকদের হাজার-হাজার কোটি টাকা নামমাত্র সুদে ঋণ দিয়েছে। অল্প মজুরিতে অধিক কাজ করানো, শ্রমিকদের প্রাপ্য পাওনা আত্মসাৎ, প্রতিবাদ করলে নির্মম নিপীড়নের মাধ্যমে দমন করাসহ মালিকদের সব অনৈতিক চর্চাকে প্রচ্ছন্নভাবে প্রশ্রয় দিচ্ছে। রাষ্ট্র নিপীড়িতকে রক্ষার বদলে নিপীড়কের ভাড়াটে বাহিনীর ভূমিকা নিয়েছে। রাষ্ট্রের এই দায়িত্বহীন আচরণ শিল্পমালিকদের আরও নির্মম হতে উৎসাহিত করছে।
বিজ্ঞাপন
বক্তারা বলেন, প্রকৃত সত্য উদঘাটনে বিচারবিভাগীয় তদন্তের পাশাপাশি একটি গণতদন্ত করতে হবে। প্রকৃত অপরাধীকে চিহ্নিত করে তার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। দেশ ও প্রবাসের প্রায় ৮ কোটি শ্রমজীবী মানুষের শ্রমে সৃষ্ট উৎপাদন আর তাদের দেওয়া করের টাকায় রাষ্ট্র পরিচালিত হয়।
তারা বলেন, রাষ্ট্রের মালিক এই শ্রমজীবী মানুষেরা, পুলিশসহ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা এই শ্রমজীবীদের কর্মচারী। যদি পুলিশের গুলিতে ঐ পাঁচজন শ্রমিক নিহত হয়ে থাকে তাহলে চাকর হয়ে মালিকের বুকে গুলি করার মত দৃষ্টতা প্রতিরোধে দায়ী পুলিশ সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। আর যদি এসআলম গ্রুপের নিরাপত্তারক্ষীরা গুলি করে ঐ শ্রমিকদের হত্যা করে থাকে তবে শুধু সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তারক্ষী নয়, নির্দেশদাতা মালিকেরও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, সহ-সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, কোষাধ্যক্ষ জুলফিকার আলী, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সাবেক সভাপতি খলিলুর রহমান, বাংলাদেশ ট্যুরিজম হোটেলস ওয়ার্কার্স এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের আহবায়ক রাশেদুর রহমান রাশেদ প্রমুখ।
এমএইচএন/ওএফ