ছাত্র ইউনিয়নের প্রতীকী মানববন্ধন

চার দফা দাবিতে প্রতীকী মানববন্ধন করেছে লড়াই সংগ্রামের অগ্রণী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। রোববার (১৮ এপ্রিল) শাহবাগে অবস্থিত জাতীয় জাদুঘরের সামনে মানববন্ধন করে করে সংগঠনটি। গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন মনে করে, যে শ্রমিকদের কঠোর শ্রমে দেশের অর্থনীতি টিকে আছে, তাদের গুলি করে হত্যা করার যে দুঃসাহস আওয়ামী লীগ সরকারের পেটুয়া পুলিশ বাহিনী দেখিয়েছে, তার বিচার এই সরকার না করলে মানুষ নিজে তার বদলা নিতে পিছপা হবে না। 

সারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ যখন পরিবেশ ও মানব শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দিচ্ছে, সেই সময়ে মানুষের প্রতিরোধকে অগ্রাহ্য করে দেশি-বিদেশি বেনিয়াদের মুনাফা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে সরকার। শুধু তাই নয়, বাঁশখালীতে নির্মাণাধীন এস আলম গ্রুপ ও চীনভিত্তিক সেপকো থ্রির মালিকানাধীন কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে গত ১৭ এপ্রিল বকেয়া বেতন পরিশোধসহ বেশ কয়েকটি যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের দমন করতে পুলিশ ডাকে কর্তৃপক্ষ। 

পুলিশ এসে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে খুন করে অন্তত পাঁচ জন মানুষকে। উন্নয়নের ফাঁপা বুলির আড়ালে বেনিয়াদের স্বার্থ রক্ষা করতে যে সরকার দেশের মানুষের ওপর গুলি চালাতেও কুণ্ঠা বোধ করে না, সেই সরকার আর যাই হোক দেশের খেটে খাওয়া মানুষের সরকার না।

অন্যদিকে করোনা মহামারির মধ্যে সুদূরপ্রসারী ভাবনাহীন লকডাউন দেশের জনগণকে আরও এক ভয়াবহ পরিণতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। পর্যাপ্ত রেশনের ব্যবস্থা না করে শ্রমজীবী মানুষদের ঘর থেকে বের হতে না দেওয়ার মধ্য দিয়ে সরকার করোনা থেকে বাঁচানোর নাম করে আসলে মানুষকে না খেয়ে মরার দিকে ঠেলে দিয়েছে। 

আবার করোনা আক্রান্ত মানুষের জন্য সরকারি হাসপাতালে নেই পর্যাপ্ত আইসিইউ, স্বাস্থ্যখাতের যোদ্ধাদের জন্য নেই পর্যাপ্ত প্রণোদনা ও সুরক্ষা সরঞ্জাম। এর মধ্যে এই সকল অনিয়ম, অন্যায়, লোকদেখানো মানবতার বিরুদ্ধে যারাই কথা বলছেন, তাদেরকেই ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নামে জেলে ভরে করা হচ্ছে অকথ্য নির্যাতন। এই পরিস্থিতিতে প্রতীকী মানবন্ধনের মধ্য দিয়ে ছাত্র ইউনিয়ন ঘোষিত চার দফা হচ্ছে- চট্টগ্রামে শ্রমিক হত্যার বিচার কর, লকডাউনে শ্রমজীবী মানুষের ঘরে ঘরে রেশন দাও, স্বাস্থ্যখাতে প্রণোদনা দাও ও সরকারি তত্ত্বাবধানে আইসিইউ বেডের সংখ্যা বৃদ্ধি কর এবং শ্রমিক নেতা রুহুল আমিনকে নিঃশর্ত মুক্তি দাও ও ডিজিটাল নিরাপত্তা  আইন বাতিল কর।

ছাত্র ইউনিয়ন মনে করে, দেশের প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষের উচিৎ এই সরকারের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া, প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসা। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কথা দিচ্ছে অধিকার আদায়ের প্রতিটি সংগ্রামে অতীতের মত তার সামর্থ্য অনুযায়ী মানুষের পাশে থাকবে।

আরএইচ