ধর্মীয় নেতাদের নির্বিচারে গ্রেফতার করছে সরকার : ফখরুল
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর / ফাইল ছবি
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে চলমান ‘লকডাউনে’র সুযোগে সরকার ধর্মীয় নেতাদের নির্বিচারে গ্রেফতার করছে। বিএনপি নেতাকর্মীদেরও গ্রেফতার অব্যাহত রয়েছে। এখন পর্যন্ত দলের প্রায় ৩০০ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশের মানুষের কাছে যারা শ্রদ্ধার পাত্র, তাদের গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে সরকার। তাদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলাও দেওয়া হয়েছে। আলেম-ওলামাদের মুক্তি দিতে হবে। তাদের মামলাগুলোও প্রত্যাহার করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
২৬ মার্চ স্বাধীনতার দিবসকে কেন্দ্র করে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলো সরকারের তৈরি করা দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, এ ঘটনাগুলো যেন ঘটে তার ব্যবস্থা পরিকল্পিতভাবে করেছে সরকার। আপনারা লক্ষ্য করেছেন, অনেকগুলো ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সংগঠন ২৬ মার্চ উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের বিরোধিতা করেছিল। বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েছিল। কিন্তু বায়তুল মোকাররমে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি চলছিল। এটাকে অশান্তিপূর্ণ করে দেওয়ার পেছনে পুলিশের সবচেয়ে বড় ভূমিকা রয়েছে। তারপরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আক্রমণ করে। তারা এ কর্মসূচিতে হামলা চালায় । সে কারণেই হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘাতের ঘটনা ঘটেছিল।
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘লকডাউনে’র সময় আরও বৃদ্ধি করা হবে। কিন্তু শ্রমিক ও কৃষকদের জন্য কোনো ব্যবস্থা না করেই এই ‘লকডাউন’ ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষ অনেক কষ্টে আছে। আমরা আবারও বলছি, দিন আনে দিন খায় এমন মানুষকে নগদ অর্থ প্রধান করতে হবে। তার জন্য প্রয়োজনে বড়-বড় উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ স্থগিত রেখে সেখানে টাকা ব্যয় না করে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাছে আর্থিক প্রণোদনা পৌঁছাতে হবে।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, কোনো রাজনীতির জন্য নয়, মানুষকে বাঁচানোর জন্য এসব বিষয় সামনে নিয়ে আসতে হবে। এখন মানুষকে বাঁচানো ছাড়া আর কী করার আছে? অন্যান্য দেশ প্রথমে যেটা করেছে, সেটা হলো তারা বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছে। আর নগদ টাকা যদি সাধারণ মানুষের কাছে না পৌঁছায় তাহলে অর্থনীতিই অচল হয়ে যাবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ধর্মীয় নেতাদের এভাবে অপমান ও হয়রানি ধর্মপ্রাণ মানুষ কোনো দিন মেনে নেবে না। আমরা আহ্বান জানাবো অবিলম্বে এসব মামলা প্রত্যাহার করা হোক। আলেম-ওলামাদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হোক। একইসঙ্গে বিএনপির যেসব নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া হোক।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি সবাইকে যেটা বোঝাতে চান তা হলো গণতন্ত্রের একমাত্র ধারক ও বাহক তারাই। তিনি বলেছেন, বিএনপিতেই গণতন্ত্র নেই, তারাই আবার গণতন্ত্রের কথা বলেন। কিন্তু বিষয় সেটা নয়। গত কয়েক বছরে আপনারা গণতন্ত্রকে কোথায় নিয়েছেন? পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে এখন গণতন্ত্রের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা এখন গণবিচ্ছিন্ন দলে পরিণত হয়েছে।
করোনাকালে মানুষের জীবন ও জীবিকার নিশ্চয়তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় সরকারের পদত্যাগ করা উচিত দাবি করে ফখরুল বলেন, করোনার টিকা সংগ্রহ ও আমদানিতে ব্যবসায়ীকে সম্পৃক্ত করার কারণে এবং পরিকল্পিত কোনো কৌশল না থাকায় আজ টিকা প্রাপ্তিও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এএইচআর/এসকেডি