অসাম্প্রদায়িকতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের মানুষকে হারালাম
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) অন্যতম উপদেষ্টা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড হায়দার আকবর খান রনোর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।
শনিবার (১১ মে) সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ শোক জানানো হয়।
বিজ্ঞাপন
বিবৃতিতে বলা হয়, বিশিষ্ট মার্কসবাদী তাত্ত্বিক দেশের শীর্ষ বামপন্থি রাজনীতিক, লেখক, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) অন্যতম উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড হায়দার আকবর খান রনো আর নেই। ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন।
হায়দার আকবর খান রনোর মৃত্যুতে দেশ একজন দেশপ্রেমিক, আজীবন সংগ্রামী, দেশের মানুষের শোষণ মুক্তির সংগ্রামের প্রিয় মানুষকে হারালো। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কমরেড রনো ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন থেকে শুরু করে পাকিস্তানি স্বৈরাচারবিরোধী সংগ্রাম, মহান মুক্তিযুদ্ধ, এ দেশে অসাম্প্রদায়িকতা, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অবিচল ছিলেন। জেল-জুলুম নির্যাতন উপেক্ষা করে তিনি তার সংগ্রামী জীবন অব্যাহত রেখেছিলেন। একজন মার্কসবাদী তাত্ত্বিক হিসেবে তিনি অসংখ্য লেখনী রেখে গেছেন, যা নতুন প্রজন্মের জন্য সংগ্রামের প্রেরণা হিসেবে থাকবে। তিনি জীবনের শুরুতে ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন। ছাত্র আন্দোলন শেষে শ্রমিকের লড়াইয়ে শামিল হন তিনি। এ অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে শ্রমিকশ্রেণির মুক্তি আন্দোলনকেও ত্বরান্বিত করেছেন। এ দেশের শ্রমজীবী মেহনতি মানুষকে সংগঠিত করার মাধ্যমে শোষণমুক্তি ও সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আজীবন তিনি নিয়োজিত ছিলেন। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময় তিনি সংগঠন অগ্রসর করার কাজেও আত্মনিয়োগ করেছিলেন। দীর্ঘ অসুস্থতার মধ্যেও পার্টির দায়িত্ব পালনে তিনি কখনো পিছু হটেননি।
বিজ্ঞাপন
বিবৃতিতে তার শোকসন্তপ্ত পরিবার পরিজনের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলা হয়, তার কর্মযজ্ঞকে সামনে রেখে আগামী দিনে দেশে সমাজতন্ত্র তথা ‘মুক্ত মানবের মুক্ত সমাজ’ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম বেগবান করার মধ্য দিয়ে তাকে প্রতি মুহূর্তে আমরা স্মরণ করব।
কর্মসূচি
হায়দার আকবর খান রনোর মরদেহ সকালে তার ধানমন্ডির বাসস্থানে নেওয়া হয়। সেখানে পরিবারের সদস্য ছাড়াও কমিউনিস্ট পার্টি ও অন্যান্য পার্টি এবং সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাকে দেখার জন্য ছুটে যান। এরপর শমরিতা হাসপাতালের মরচুয়ারিতে তার মরদেহ রাখা হয়।
সোমবার (১৩ মে) সকাল ১০টায় কমরেড হায়দার আকবর খান রনোর মরদেহ বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিপি) কেন্দ্রীয় কার্যালয় মুক্তিভবনে নেওয়া হবে। সেখানে পার্টির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।
বেলা ১১টায় কমরেড হায়দার খান রনোর মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। জাতির পক্ষ থেকে সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। দুপুর দেড়টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
সোমবার শোক দিবস পালন
সোমবার সারা দেশে পার্টি কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন, দলীয় পতাকা অর্ধনমিত ও কমরেড হায়দার আকবর খান প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও শোক দিবসের কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে।
এমএইচএন/এসএসএইচ