নাগরিক সেবাপ্রাপ্তিতে ভোগান্তি নিরসনের জন্য সরকারকে দ্রুত স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির ও কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট ড. মো. হেলাল উদ্দিন।

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গণশক্তি সভার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত নাগরিক সেবাপ্রাপ্তিতে ভোগান্তি বন্ধের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম।

সমাবেশে আইনজীবী ড. হেলাল উদ্দিন চলমান সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করে অন্তর্বর্তী সরকারের নানামুখী সমালোচনা করেন। এসময় তিনি সরকারকে বিভিন্ন পরামর্শও দেন।

ড. হেলাল বলেন, ইউনিয়ন, পৌরসভা, উপজেলা, জেলা পরিষদ ও সিটি কর্পোরেশনগুলোতে নাগরিক সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। জন্ম সনদ, মৃত্যু সনদ, নাগরিক সনদ এসব নিতেই সাধারণ মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। ভোগান্তি নিরসনের জন্য সরকারকে দ্রুত স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।

‘ফ্যাসিবাদের পতনের ৬ মাস অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচারে কার্যকর কোনো অগ্রগতি চোখে পড়ছে না। উল্টো ফ্যাসিবাদের আমলে নির্মম নির্যাতনের শিকার জামায়াতের তৎকালীন কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মজলুম জননেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মতো ব্যক্তিদের এখনো পর্যন্ত জেলে বন্দি করে রাখা হয়েছে। এভাবে নির্দোষ মজলুম ব্যক্তিদের জেলে বন্দি করে রাখা হলে সরকারের প্রতি মানুষ আস্থা হারাবে।’

তিনি অবিলম্বে এটিএম আজরুল ইসলামের মুক্তি দাবি করেন এবং খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার দাবি করেন।

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কেউ নিজ ইচ্ছায় বসেনি, তাদের সরকারে বসানো হয়েছে। সরকার ক্ষমতা ধরে রাখতে আসেনি, রাখবে না, রাখতে পারবেও না। এ সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচনের চেষ্টা করছে। তবে শুধু সংস্কার নয়, প্রয়োজন গণহত্যার বিচার কাজও সম্পন্ন করা। রাজনৈতিক সরকার গণহত্যার বিচার রাজনৈতিক বিবেচনায় করবে, ফলে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে না এবং বিচার জনমনে প্রশ্ন বৃদ্ধি হবে। এজন্য অন্তর্বর্তী  সরকারের মূল দায়িত্ব ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচার এবং গণহত্যার সঙ্গে জড়িত ও মদদদাতাদের বিচার করা এবং রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করা। অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করলে বিপ্লব ব্যর্থ হবে। বিপ্লবের সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধভাবে অন্তর্বর্তী সরকারকে সহায়তা করা।

প্রফেসর ড. দেওয়ান সাজ্জাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক আবু বক্কর, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ খন্দকার আলমগীর হোসেন, সাংবাদিক সাদেক রহমান, গণ মুক্তিজোটের কো-চেয়ারম্যান আখতার হোসেন, নাগরিক অধিকার পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আহাদ নুর, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নির্বাহী সদস্য আব্দুল্লাহ মজুমদার, বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক আলাউদ্দিন কামরুল এবং গবেষক ইমরান চৌধুরী প্রমুখ।

জেইউ/এসএসএইচ