ইসলামী আন্দোলন
রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে সালাহউদ্দিনের ভাবনা জাতিকে শঙ্কিত করেছে
রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিনের ভাবনা জাতিকে শঙ্কিত করেছে বলে মনে করছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এক বিবৃতিতে শনিবার (৩ মে) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও দলের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান একথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
বিবৃতিতে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরে যে রাজনৈতিক বন্দোবস্ত চলেছে তা বারবার জাতিকে স্বৈরতন্ত্রের কবলে ফেলেছে। সর্বশেষ শেখ হাসিনার স্বৈরতন্ত্রে অতিষ্ঠ ছাত্র-জনতা রক্তের বিনিময়ে স্বৈরাচার উৎখাত করেছে এবং সমগ্র দেশ এই বিষয়ে একমত যে, মৌলিক সংস্কারের মাধ্যমে রাষ্ট্রকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যাতে করে আগামীতে আর কোনো স্বৈরতন্ত্র জন্ম নিতে না পারে।
কিন্তু সালাহউদ্দিন আহমেদের বক্তব্যে তার ও বিএনপির যে চিন্তা প্রকাশ পেয়েছে তা হতাশাজনক। এটা জাতিকে শঙ্কিত করেছে।
বিজ্ঞাপন
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুখপাত্র বলেন, এতোবড় ও নৃশংস গণহত্যার পরে আওয়ামী লীগের কোনো পর্যায়ের কোনো নেতা সামান্যতম অনুশোচনা করে নাই। দুঃখ প্রকাশ করে নাই। কেউ এখন পর্যন্ত ক্ষমাও চায় নাই। গণহত্যা করেও তাদের দিক থেকে কোনো অনুতাপ নাই। অথচ তাদেরকে রাজনীতিতে জায়গা করে দেওয়ার জন্য ন্যাশনাল রিকনসিলিয়েশন কমিশন-এর ধারণাকে সামনে নিয়ে আসার স্পষ্ট অপচেষ্টা দেখা যাচ্ছে।
মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোতে গণতান্ত্রিক চর্চা না থাকার কারণে দলীয় প্রধানরা দলে সর্বময় কর্তা হয়ে ওঠেন। দল সরকার গঠন করলে তিনিই প্রধানমন্ত্রী হন এবং সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীকেও সর্বময় ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রধান রাস্তাই হলো এটা। বিদ্যমান এই বন্দোবস্ত ব্যবহার করেই বাংলাদেশে নির্বাচিত স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
ইসলামী আন্দোলনসহ গোটা জাতি এই বন্দোবস্ত পরিবর্তনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সে জন্যই একক ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়া, দলীয় প্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধান একক ব্যক্তি না হওয়াসহ রাষ্ট্র ক্ষমতায় ভারসাম্য আনার জন্য রাষ্ট্রপতিকে ক্ষমতায়িত করার প্রস্তাব সব মহল থেকে করা হয়েছে। অথচ বিএনপি নিজ দলের ভেতরে গণতন্ত্র চর্চা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। একইসঙ্গে রাষ্ট্র সংস্কারের এই মৌলিক জায়গাতেও দ্বিমত পোষণ করে আসছে। এটা পটেনশিয়াল ফ্যাসিজম-এর আশঙ্কা তৈরি করে জাতির মধ্যে।
ইসলামী আন্দোলনের মুখপাত্র বলেন, সংস্কার প্রশ্নে বিএনপির অবস্থান ২৪ এর অভ্যুত্থানের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে। জনতা কেবল হাসিনাকে উৎখাত করতেই রক্ত দেয়নি। বরং স্বৈরতন্ত্র উৎখাতে জীবন উৎসর্গ করেছে। আর দেশ থেকে স্থায়ীভাবে স্বৈরতন্ত্র উৎখাত করতে হলে রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার নিশ্চিত করতেই হবে। আর সেজন্য বিএনপির সমর্থন জাতি আশা করে।
কিন্তু বিএনপি নেতাদের বক্তব্য বিশেষ করে আজ প্রকাশিত সালাহউদ্দিন আহমেদের বক্তব্য জাতিকে হতাশ করেছে। আমরা বিএনপির নেতাদের প্রতি আহ্বান করবো, জনতার আবেগ-অনুভূতি ও প্রতিজ্ঞার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে স্বৈরতন্ত্রের বীজ অঙ্কুরেই ধ্বংস করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার বিএনপি সমর্থন করবে, এটাই জাতি প্রত্যাশা করে।
জেইউ/জেডএস