রুকন সম্মেলনে জামায়াত আমির
নেতাদের বেগমপাড়া নাই, দল নিয়ন্ত্রণ করা জামায়াত দেশও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে
জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের বেগমপাড়া কিংবা পিসি পাড়া নাই উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জামায়াতের কোনো নেতা কখনোই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়নি এবং যাবেও না। দল নিয়ন্ত্রণে রাখা জামায়াত দেশও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং প্রচার ও মিডিয়া বিভাগীয় সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ। সম্মেলন দারসুল কুরআন পেশ করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা এটিএম মা'ছুম।
বিজ্ঞাপন
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, যারা দেশ ও জনগণকে ভালোবাসে না তারাই বিদেশে নিজেদের দ্বিতীয় ঠিকানা গড়ে তুলেছেন। তারা নিজেদের স্বার্থে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। অপরদিকে দেশের সংকটকালে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় জামায়াত নেতারা বিদেশ থেকে দেশে এসে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আধিপাত্যবাদের দোসর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। যার কারণে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদেরকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বিচারিক হত্যা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, বিগত ৫৪ বছরে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের একজন নাগরিকের প্রতিও অবিচার করেনি, জুলুম করেনি। জামায়াতে ইসলামীর কোনো নেতাকর্মী চাঁদাবাজি কিংবা সন্ত্রাসী করেনি, করবেও না। জামায়াত দল নিয়ন্ত্রণ করেছে, দেশও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। যারা দলই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না তারা দেশে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সার্বিক পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।
পৃথিবীর একমাত্র অসাম্প্রদায়িক ধর্ম ইসলাম উল্লেখ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, মাদক কারবারি, ধর্ষক, খুনি, লুটেরাদের ভয়ের কারণ আছে এজন্য তারা অপপ্রচার চালাচ্ছে।
যারা ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করে তাদের মা-বোন যদি প্রয়োজনে বাজারে যেতে পারে, হাসপাতালে যেতে পারে, প্রয়োজনীয় মৌলিক সব কাজ করতে পারে তাহলে কেন ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে নারীদের চলাফেরায় বাধা সৃষ্টি হবে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, সব ধর্মের নারী-পুরুষ সবাই রাষ্ট্রের কাছে সমান। রাষ্ট্র ধর্মের কিংবা লিঙ্গের বৈষম্য করতে পারে না।
ইনসাফভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে সকলের সহযোগিতা চেয়ে জামায়াত আমির বলেন, ইসলাম ও দেশপ্রেমিক সবাইকে সঙ্গে নিয়ে পথ চলতে চায় জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতের রাজনীতি হবে কেবলই মানুষ ও মানবতার কল্যাণে।
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জামায়াতে ইসলামী আগামীতে রাষ্ট্র পরিচালনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মানুষের কল্যাণ সাধনের জন্যই জামায়াতে ব্যাপকভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। জামায়াতের অগ্রযাত্রা কোনো ষড়যন্ত্রে থেমে যায়নি, যাবে না। একটি বৈষম্যহীন সুখী-সমৃদ্ধ আধুনিক কল্যাণ ও মানবিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসতে তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন, মোহাম্মদ কামাল হোসেন, ড. আব্দুল মান্নান এবং মো. শামছুর রহমান। এছাড়াও কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জেইউ/এসএসএইচ