জামায়াতের নায়েবে আমির মোহাম্মদ তাহের
‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না দিলে কমিশনসহ সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করবো’
ফাইল ছবি
পিআর পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সাইয়েদ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, গত ৫৪ বছরের নির্বাচনী পদ্ধতিতে বাংলাদেশে দলীয়করণ, দখল, দূষণ, ভুয়া নির্বাচন, ভোটারবিহীন ঘোষণা ও রাতের নির্বাচনসহ নানা অপসংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। ফলে আমরা মনে করি, এখন সারা বিশ্বে প্রায় ৯০টি দেশে যেভাবে পিআর পদ্ধতি আছে, বাংলাদেশেও তা প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২৩তম দিনের বিরতিতে সাংবাদিকদের এ কথাগুলো বলেন জামায়াতের এই নায়েবে আমির।
বিজ্ঞাপন
নায়েবে আমির বলেন, “পিয়ার পদ্ধতি এখন আফ্রিকা, ইউরোপ, আমেরিকা, এশিয়া— প্রতিটি মহাদেশেই আছে। গরিব-ধনী বা কালো-সাদার ভেদে নয়, এটি একটি বৈশ্বিক বাস্তবতা। এমনকি অনেক দেশ প্রতি বছর নতুনভাবে এই পদ্ধতি গ্রহণ করছে।”
তাহের আরও বলেন, “আমরা পরিষ্কার বলেছি, আমরা পিআর চাই এবং অধিকাংশ দলও পিআরের পক্ষে।”
বিজ্ঞাপন
তাহের সংলাপে সময় ব্যয় ও কঠোর পরিশ্রমের কথা উল্লেখ করে বলেন, “আমরা এত কষ্ট করলাম, আপনারা কাভার করলেন, কিন্তু বাস্তবায়ন না হলে এসবের কোনো মূল্য থাকবে না। বাস্তবায়ন না হলে শপথ করারও কোনো মূল্য থাকে না। তাই বাস্তবায়নটাই মুখ্য।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “বিএনপি বলছে, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই। কিন্তু আমরা মনে করি, কেবল প্রতিশ্রুতির ওপর নির্ভর করলে হবে না। আইনি ভিত্তি না থাকলে এই চার্টার মূল্যহীন হয়ে পড়বে। সেজন্য আমরা কমিশন এবং সরকারের বিরুদ্ধে কমপেনসেট মামলা করব।”
তিনি বলেন, “আইনি ভিত্তি ছাড়া এই চার্টার জিরো হবে। আমরা পরিষ্কার বলেছি, আইনগত ভিত্তি ছাড়া সই করব না। এই সরকারের মেয়াদেই এটি কার্যকর করতে হবে। কাল থেকেই এটা সম্ভব।”
তাহের বলেন, “গত ২৩ দিনে আমরা যে সংখ্যক ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দেখেছি, তা আগের ২২ দিনে দেখিনি। তবুও এটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ। একজন ‘না’ বলতেই পারেন। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ পক্ষে থাকলে সেটা গ্রহণযোগ্যতা পায়।”
তিনি বলেন, “আইনি ভিত্তি দেওয়া এখনই সম্ভব। অলটারনেটিভ আছে, উদাহরণ আছে। যারা বলছেন এটা এখন দেওয়া যাবে না, তারা জাতিকে বিভ্রান্ত করছেন।”
তাহের বলেন, “আমরা স্পষ্ট করছি, আমরা আইনগত ভিত্তি চাই। আইনি ভিত্তি না থাকলে এই চার্টারে স্বাক্ষর করার অর্থ নেই। এমন সনদে সই করার আর না করার মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকে না।”
তিনি আরও বলেন, “এটা শুধু আমাদের মত নয়, উচ্চকক্ষ হলো একটা ‘ব্যালেন্স অব অথরিটি’। মূল আইন প্রণয়ন হবে নিম্নকক্ষে, আর উচ্চকক্ষ হবে গাইডিং ও কন্ট্রোলিং বডি।”
তাহের বলেন, “আইনি ভিত্তি না দিয়ে যদি সরকার বাস্তবায়নের পথে না এগোয়, তাহলে আমরা এই সংস্কার প্রক্রিয়াকে অসমাপ্ত মনে করব। সই করলেই যদি বাস্তবায়ন না হয়, তাহলে এটা এক ধরনের প্রহসন। সুতরাং আমরা সরকার ও কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন নিজেদের ওয়াদা বাস্তবায়নের জন্য এখনই উদ্যোগ গ্রহণ করে।”
তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, “আমরা জাতির সঙ্গে আর কোনো তামাশা হতে দেব না।”
এমএসআই/এসএম