জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোট ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর উত্তর সেক্রেটারি ড. মোহাম্মদ রেজাউল করিম।

তিনি বলেন, আজকের ঘোষিত বার্তা যদি যমুনা পেরোতে না পারে, তাহলে রাস্তাই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।

তার দাবি, সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে সবচেয়ে বড় বাধা কোনো দলের অবস্থান নয়, বরং লুণ্ঠন, চাঁদাবাজি এবং রাষ্ট্রীয় জুলুমের কাঠামো। এ সমাবেশকে তিনি স্বাধীনতা ও গণঅধিকার রক্ষার খোলামেলা মাঠ পর্ব বলে আখ্যা দেন।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানী পল্টন মোড়ে আটটি ইসলামী দলের যৌথ সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন ড. মোহাম্মদ রেজাউল করিম।

জামায়াতের এ নেতা বলেন, এ সমাবেশ শুধুই কোনো রাজনৈতিক জমায়েত নয়, এটি অবিলম্বে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায়ের নির্ণায়ক গণমূল্য ঘোষণা।

বক্তব্যের শুরুতেই তিনি বলেন, সংকট নির্বাচন চাই কি না– এটা নয়, সংকট হলো যারা চাঁদা নেয়, ভয় দেখায়, লুণ্ঠন করে এবং মানুষকে পাথর দিয়ে আঘাত করে, সেই শক্তিই সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ নষ্ট করছে। কিন্তু মানুষ ভোট চায়। কিন্তু ভোটের পথে দাঁড়িয়ে আছে জুলুমের পাহাড়, লুণ্ঠনের নোংরা কাঠামো।

রেজাউল করিম দাবি করেন, জনগণ কোনো দল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তাদের কর্মকাণ্ডের কারণেই, কথার কারণে নয়। তিনি জানান, আন্দোলনের প্রতিটি ধাপেই নেতাকর্মীদের আচরণ হবে স্বেচ্ছাসেবকের মতো– শৃঙ্খল, সহনশীল এবং জনস্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া। তিনি অনুরোধ করেন, পথচলতি মানুষ, সাংবাদিক ও প্রশাসনের প্রতি যেন সম্মান ও সহযোগিতা বজায় রাখা হয়।

জামায়াতের এ নেতা বলেন, শীর্ষ নেতারা আজ যে বার্তা দেবেন, সেটি যদি যমুনা পেরোতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্যার সমাধান রাস্তাই ঠিক করবে।

রেজাউল করিম বলেন, একটি দল শুধু বলছে তারা নির্বাচন চায়, নির্বাচন চায়। কিন্তু জনগণ চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব আর পাথর দিয়ে মানুষ মারার রাজনীতির কারণে সেই দল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

তিনি বলেন, নির্বাচনের বাধা গণভোট নয়, নির্বাচনের প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে জুলুম-নির্যাতন, চাঁদাবাজি, লুণ্ঠন আর যারা মানুষ হত্যা করছে– আজকের বাস্তব বাধা সেটাই।

নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে জামায়াতের এ নেতা বলেন, আজকের সমাবেশে দলের শীর্ষ নেতারা জাতির উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দেবেন। প্রতিটি নেতাকর্মী সুশৃঙ্খলভাবে স্বেচ্ছাসেবকের ভূমিকা পালন করবেন। সাধারণ মানুষের পথ চলায় যেন কোনো সমস্যা না হয়, সেদিকে সবার খেয়াল রাখতে হবে।

চূড়ান্ত সতর্কবার্তা দিয়ে রেজাউল করিম বলেন, ‘আজকের বার্তা যদি যমুনা পর্যন্ত না পৌঁছায়, তাহলে জনগণ পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।’

সমাবেশকে ‘ঐতিহাসিক মহাসমুদ্র’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, আজকের এই গণসমাবেশ গণভোটের পক্ষে। আজকের এই সমাবেশ স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের রক্ষাকবচ। আর এই সমাবেশই অবিলম্বে সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন দাবি আদায়ের মঞ্চ।

জামায়াতের এ নেতা জানান, রাজধানীর প্রতিটি এলাকা থেকে মিছিলের পর মিছিল সমাবেশস্থলে পৌঁছাচ্ছে।

টিআই/এসএসএইচ