মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীরা/ পুরাতন ছবি

করোনাভাইরাস নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত বিদেশি শ্রমিক নেবে না মালয়েশিয়া। রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) সাংবাদিকদের এ কথা জানান দেশটির উদ্ভিদ, শিল্প ও পণ্যমন্ত্রী দাতুক ডা. মোহাম্মদ খায়রুদ্দীন আমান রাজালী। 

ফেলডা ইনাস উতারায় একটি পাইলট প্রকল্প পরিদর্শন শেষে ডা. মোহাম্মদ খায়রুদ্দীন বলেন, আমরা চাই না যে, করোনা পরিস্থিতিতে বিদেশি কর্মীরা ঝুঁকির মুখে পড়ুক বা তাদের মাধ্যমে করোনা বিস্তার লাভ করুক। যেসব প্রতিষ্ঠানে বিদেশি কর্মীরা কাজ করেন সেসব প্রতিষ্ঠানের আবাসন ব্যবস্থা কেমন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

এ লক্ষ্যে সরকারের একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে বলে জানান এই মন্ত্রী। তিনি বলেন, এটি সফল হলে সরকার বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের বিষয়ে বিবেচনা করবে। করোনার ধাক্কা সামলে উঠতে দেশটিতে সব ক্ষেত্রেই মালয়েশিয়ান কর্মীদের প্রধান্য দেওয়া হবে। 

এদিকে দেশে এসে করোনার কারণে আটকে পড়া বাংলাদেশি শ্রমিকদের মালয়েশিয়ায় ফিরিয়ে নিতে দেশটিকে অনুরোধ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ মো. হাশিমকে এ অনুরোধ করেন। তখন হাইকিশনার হাজনাহ মো. হাশিম জানিয়েছিলেন, তিনি তার সরকারের সঙ্গে আটকাপড়াদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরবেন। বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য বন্ধ মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলার বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে জিটুজি চূড়ান্ত করার কথাও বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। 

বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির অন্যতম বাজার মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো পথ বন্ধ ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে। মূলত বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার একটি সংঘবদ্ধ চক্রের একচেটিয়া বাজার নিয়ন্ত্রণের অভিযোগে হঠাৎ কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেয় দেশটি। পরে অবশ্য ঢাকার কূটনৈতিক তৎপরতায় দেশটি বাংলাদেশিদের জন্য শ্রমবাজার খোলার আশ্বাস দেয়। এ নিয়ে ঢাকা-কুয়ালালামপুরের মধ্যে বেশ কয়েকবার মন্ত্রী ও সচিব পর্যায়ের সফর বিনিময় এবং জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হলেও এখন দেশটিতে বাংলাদেশিদের জন্য শ্রমবাজার বন্ধ রয়েছে। ২০১৯  সালের শেষের দিকে বাংলাদেশিদের জন্য দেশটি শ্রমবাজার খুলে দেওয়া নিয়ে আশার আলো দেখা যায়। তবে হঠাৎ করে দেশটির ক্ষমতার পালাবদলে আর বাংলাদেশির জন্য খোলেনি শ্রমবাজার।

অন্যদিকে গত বছরের সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে মালয়েশিয়াজুড়ে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে রিকভারি মুভমেন্ট কন্ট্রোল অর্ডার (আরএমসিও) জারি করা হয়। এতে দেশটিতে থাকা অনিবন্ধিত অভিবাসীদের মধ্যে নতুন করোনা সংক্রমিতের ক্লাস্টার চিহ্নিত হওয়ার পর বাংলাদেশসহ প্রায় ১২টি দেশের নাগরিকদের মালয়েশিয়া প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। যা গত ৩১ ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। আরএমসিও শেষ হবার আগে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় পেজ সামাল দিতে দেশটি আবারও লকডাউন ঘোষণা করে। এতে করে এখন অবদি আটকাপড়া বাংলাদেশিকর্মীরা সেখানে যেতে পারছে না।

এইচকে