দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন কবি মহাদেব সাহা। এ জন্য তাকে অভিনন্দন ও শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। কানাডার আলবার্টার প্রথম বাংলা নিউজ পোর্টাল প্রবাস বাংলা ভয়েসের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক ভার্চুয়াল আলোচনায় এ অভিনন্দন জানানো হয়। এতে সঞ্চালনা করেন প্রবাস বাংলা ভয়েসের প্রধান সম্পাদক আহসান রাজীব বুলবুল। 

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কলামিস্ট, উন্নয়ন গবেষক ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক মো. মাহমুদ হাসান। প্রধান অতিথি ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালগেরির প্রফেসর ড. আনিস হক। প্রধান বক্তা ছিলেন কবি ফেরদৌস নাহার ও প্রবাসী সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর। এছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কানাডা অ্যাসোসিয়েশন অব ক্যালগেরির সভাপতি মো. রশিদ রিপন, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সাবেক কর্মকর্তা কাজী মাহফুজুল হক, লেখক ও কবিতালোকের সভাপতি বায়াজিদ গালিব এবং কবি মহাদেব সাহার ছেলে তীর্থ সাহা।

আলোচনায় বক্তারা কবির কর্মজীবনের ওপর আলোকপাত করে বলেন কবি মহাদেব সাহার অনবদ্য রচনা যুগ যুগ ধরে মানুষের হৃদয়ে গেঁথে থাকবে। 

বাংলাদেশ থেকে কবি মহাদেব সাহা একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন, যে জাতির জীবনে একুশে ফেব্রুয়ারি আছে, পহেলা বৈশাখ আছে, বইমেলা আছে, ৭ই মার্চ আছে, সেই জাতি কখনোই পিছিয়ে পড়তে পারে না। তিনি আরও বলেন, আমি যেখানেই থাকি, যতদূরেই থাকি আমি বাংলাদেশের মাটিতেই আছি, এ মাটির সঙ্গেই মিশে আছে আমার দেহ-মন।

স্বাগত বক্তব্যে মাহমুদ হাসান বলেন, তার অনবদ্য রচনা ও কবিতা আমাদের হৃদয়ে গেঁথে থাকবে। স্বাধীনতার এ মাসে তিনি স্বাধীনতার পদক পাওয়ায় আমরা গর্বিত।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডক্টর আনিস হক বলেন, কবি মহাদেব সাহা আমার একজন প্রিয় কবি। স্বাধীনতা পদক পাওয়ায় তার প্রতি সম্মান শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও অভিনন্দন। আজকের তথ্যবহুল এই আলোচনায় কবি মহাদেব সাহা সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পারলাম, সেজন্য সবাইকে ধন্যবাদ। কবির সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

কবি ফেরদৌস নাহার বলেন, মহাদেব সাহা হচ্ছেন মানুষের কবি। দৃঢ়চেতা এই কবিকে তিনি চাবুকের মতো মানুষ বলে আখ্যায়িত করে বলেন, মহাদেব সাহার সান্নিধ্য তার কাব্যিক জীবনকে পূর্ণতা দিয়েছে। মানুষের ভালোবাসায় তিনি যেমন কোমল হৃদয়ের অধিকারী, আবার অধিকার আদায়ে তার কবিতায় সুদৃঢ় মানসিকতার পরিচয়ই ফুটে উঠেছে। 

শওগাত আলী সাগর বলেন, সাংবাদপত্র, রাজনীতি আর কাব্যিক জগত- সব ক্ষেত্রেই কবি মহাদেব সাহা মানুষের প্রতি ভালোবাসা আর দেশের প্রতি মমত্ববোধের প্রকাশ ঘটিয়েছেন। 

মো. রশিদ রিপন বলেন, কবি মহাদেব সাহা সম্পর্কে বলতে গেলে অনেক সময়ের প্রয়োজন। তার সান্নিধ্য আমরা পেয়েছি। অসাধারণ একজন মানুষ। আমাদের অ্যাসোসিয়েশনের অনুষ্ঠানে তার সরব উপস্থিতি আমাদের অনুপ্রাণিত করতো। স্বাধীনতা পদক পাওয়ায় তার প্রতি রইলো অভিনন্দন ও শ্রদ্ধা।

কাজী মাহফুজুল হক বলেন, কবির অনবদ্য লেখা ও রচনা যেন আমাদের সকলের হদয়ের কথা। তিনি যতদিন আমাদের সাথে ক্যালগেরিতে ছিলেন তিনি আমাদের সবাইকে যেন ভালবাসার বন্ধনে বেঁধে রেখেছিলেন। কবির এই সাফল্যে আমরা গর্বিত। তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

বায়াজিদ গালিব বলেন, অনবদ্য কাব্যশৈলীর মাধ্যমে কাব্যজগতে মহাদেব সাহার শুভ আবির্ভাব ষাটের দশকে। স্বাধীনতা পুরস্কার তার অনেক আগেরই প্রাপ্য। যদিও কবি মহাদেব সাহা পুরস্কারের অনেক ঊর্ধ্বে। কাব্য জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র কবি মহাদেব সাহাকে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

কবি মহাদেব সাহার ছেলে তীর্থ সাহা বাবার সাফল্যে আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, সত্যি আমি আপনাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি আজকের এই আয়োজন করার জন্য। সবাই আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন।

অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি ফেরদৌস নাহার, কাজী মাহফুজুল হক এবং গান পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী তীর্থ সাহা।

এনএফ