অস্ট্রেলিয়ায় বাঙালির বৈশাখ
অস্ট্রেলিয়ায় বৈশাখ পালন
বাংলার সাজ, বাংলার রূপ প্রবাসে সমাদৃত করার প্রয়াসে অস্ট্রেলিয়ার পার্থে অনুষ্ঠিত হলো ‘বাংলার মেলা’। শোভাযাত্রা, শিশু-কিশোরদেরর হইচই, হরেক রকম খাবার, নাচ-গানের সৃজনশীল পরিবেশনা, সজ্জিত বটতলা, যেমন খুশি সাজো; কি ছিল না এতে? সত্যিই যেন পূর্ণ মেলার এক অপরূপ বহিঃপ্রকাশ। চিরচেনা বৈশাখের আমেজে প্রবাসে এ যেন এক বাংলাদেশময় দিন।
বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়া অ্যাসোসিয়েশন অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার উদ্যোগে শনিবার (১০ এপ্রিল) আয়োজন করা হয় এ বৈশাখী মেলা। এ মেলাকে বাংলার মেলা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন আয়োজকরা। বাংলা নববর্ষ উৎযাপনকে কেন্দ্র করে মূলত এ আয়োজন করা হয়। অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে এটিই বাংলাদেশিদের সবচেয়ে বড় মিলনমেলা। দিনটির জন্য মুখিয়ে থাকেন দর্শনার্থীরা। বছরব্যাপী পরিকল্পনা ও কর্মযজ্ঞের একটি সার্থক পরিবেশনা নিয়ে হাজির হন মেলার আয়োজকরা।
বিজ্ঞাপন
এ বছর প্রায় এক হাজার সাতশ দর্শনার্থী অংশ নেন মেলায়। দিনব্যাপী হওয়ায় নিজেদের পছন্দসই সময়ে মেলা দেখতে ভিড় করেন বাংলাদেশিরা। সকাল দশটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চলে মেলাটি। শুরুতেই মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। তারপর সাংস্কৃতিক পর্বে কয়েকটি ধাপে দৃষ্টিনন্দন পরিবেশনা রাখা হয় দর্শনার্থীদের জন্য।
বিজ্ঞাপন
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সাংসদ ইয়াজ মোবারাকায়, জগদিশ কৃশনান (এমএলএ), মেয়র প্যাট্রিক হল, অনারেরি কনসাল জেনারেল গ্রাহাম ডুপার্ট, প্রফেসার অমিত চাকমাসহ (ভাইস চ্যান্সেলর, ইউডাব্লিওএ) আরও গণ্যমান্য অনেক বাংলাদেশি।
মেলাকে সাফল্যমণ্ডিত করতে জানুয়ারি থেকে দিনরাত শ্রম দিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবীরা। কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে দলগত ও ব্যক্তিগতভাবে অবদান রেখেছেন অনেকে। বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়া অ্যাসোসিয়েশন অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি শাহেদীন শহীদ বলেন, আমরা ছাড়া গ্রেটার বাংলাদেশি কমিউনিটির অংশগ্রহণ পেয়েছি। এমনকি অনেকে স্বেচ্ছায় শ্রম দিতেও এসেছেন। মূলত বাংলা সংস্কৃতির সৌন্দর্য অস্ট্রেলিয়ানদের কাছে তুলে ধরা ও নিজেদের ঐক্য, সংহতি বজায় রাখার প্রয়াসে আমরা দীর্ঘদিন ধরে এ মেলাটি করে আসছি।
দর্শনার্থীদের মধ্যে একজন বলেন, আমরা সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করতে একটি আনন্দঘন পরিবেশ পেয়েছি। অবশ্যই বাওয়ার নেতৃবৃন্দদের অভিনন্দন জানাতে চাই।
মেলায় দেশীয় ঘরানার খাবার, কাপড়সহ নানাবিধ স্টল বসানো হয়। ঝালমুড়ি, নাড়ু, নারিকেল পিঠা, ফুচকাসহ ঝাল মিষ্টি খাবার খেতে দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে যান অনেকে। সরেজমিনে দেখা যায়, প্রিয়জন কিংবা সপরিবারে হাজির হয়েছেন বেশিরভাগ দর্শনার্থী। বাংলাদেশি ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ান ও অন্যান্য কমিউনিটির লোকজনও মেলা দেখতে আসেন।
মেলাকে সাফল্যমণ্ডিত করে তুলতে নেতৃত্বে ছিলেন শাহেদীন শহীদ রাজু, তাসনিমুল গালিব অমিত ও তন্ময় দেবনাথ। তাদের সঙ্গে স্বতর্স্ফূতভাবে অংশ নেয় একদল স্বেচ্ছাসেবী। সবমিলিয়ে এবারের মেলা ছিল জমজমাট ও উৎসবমুখর।
আরএইচ