বাংলাদেশে কোটা আন্দোলন ঘিরে ঘটে যাওয়া সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংসযজ্ঞের প্রতিবাদে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের ডাকে সাড়া দিয়ে লন্ডনে পার্লামেন্টের সামনে হাজার মানুষের এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (২৯ জুলাই) যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মাহমুদ শরীফের সভাপতিত্বে সমাবেশ পরিচালনা করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের  সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক।

যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের ডাকে সাড়া দিয়ে অঙ্গ সংগঠন ও প্রগতিশীল বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানবাধিকার সংগঠনের হাজারের অধিক মানুষ সমবেত হয়েছিলেন সেখানে।

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য ডেপুটি স্পিকার করলাইন নকস, পাউলটি হ্যামিলটন এমপি, স্টেট মিনিস্টার জিম ম্যাক মোহন এমপি, এমা লয়েল বাক এমপি ও আফজাল খান এমপি, রিচার্ড বার্গোয়েন এমপি, লি এন্ডারসন এমপি এসে সমাবেশের আয়োজকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

নেতারা তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের চলমান ঘটনাবলি নিয়ে আলোচনা করেন এবং তাদের হাতে একটি স্মারকলিপি তুলে দেন। এমপিরা বিষয়টি অবগত আছেন এবং গুরুত্ব  সহকারে আলোচনা করবেন বলে জানান।

সমাবেশে বক্তব্য দেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জালাল উদ্দিন, হরমুজ আলী মাস্টার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নঈম উদ্দিন রিয়াজ, মারুফ আহমেদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আহাদ চৌধুরী, লন্ডন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল হক লালা মিয়া, যুবলীগের সভাপতি ফকরুল ইসলাম মধু, ছাত্রলীগের সভাপতি তামিম আহমদ, মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক, শাহীন আকাতারসহ যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতারা সহযোগী সংগঠন, অঙ্গ সংগঠন এবং যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহর থেকে আসা আওয়ামী লীগের শাখা সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।

বক্তারা বলেন, ইদানীং বাংলাদেশে সংগঠিত নানা বর্বর ধ্বংসযজ্ঞ অতীতকেও হার মানিয়েছে। ভাবতে অবাক লাগে বিএনপি-জামায়াত সাধারণ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কীভাবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে দেশে একটি গৃহযুদ্ধ বাঁধানোর পাঁয়তারা করেছিল। এসব হত্যাকাণ্ডের দায় জামায়াত-বিএনপিকে নিতে হবে। আমরা দাবি জানাই মিছিলের ভেতরে কীভাবে সাধারণ ছাত্ররা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে, সেসব সঠিক তদন্তের মাধ্যমে জাতির সামনে আসুক। আমরা বাংলাদেশের পাশে আছি সবসময়।

ব্রিটেনের পার্লামেন্টের সামনে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে সমাবেশে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটা দুঃসময়ে যুক্তরাজ্যের প্রবাসীরা বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। আজকের সমাবেশও তাই প্রমাণ করে। মুক্তিযুদ্ধে আমরা যাদের পরাজিত করেছিলাম, সেই পরাজিত শক্তি বারবার স্বাধীন বাংলাদেশের অস্তিত্বে আঘাত হানতে চেয়েছে। কিন্তু কখনো সফল হয়নি। হতে পারবেও না। ছাত্র আন্দোলনের নামে, সাধারণ ছাত্রদের দাবিকে আড়াল করে যখন সারা দেশে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগে মেতে উঠে জামায়াত-বিএনপির প্রশিক্ষিত খুনি বাহিনী, আমাদের বুঝতে বাকি থাকে না কারা কলকাঠি নাড়ছে। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির চক্রান্তে হারবে না, আমরা তা বিশ্বাস করি। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্যদের সেই বিষয়গুলো অবিহিত করতে আজ আমাদের সমাবেশ।

যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা ’৭৫ এর ১৫ আগস্টের কুশীলব, পাকিস্তানি প্রেতাত্মারা বারবার আঘাত হানতে চেয়েছে বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে চেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ যখন রোল মডেল, তাদের লক্ষ্যবস্তু তখন সেই উন্নয়নযজ্ঞকে বিনষ্ট করা, যা এখন দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এই বর্বরোচিত ধ্বংসযজ্ঞ ঘটিয়ে ও এই জামায়াত-বিএনপি চক্র বসে নেই। নানারকম গুজব ছড়িয়ে দেশকে অস্থিশীল করে তুলতে চাইছে। বিদেশে সেই সব গুজব প্রচার করে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে প্রমাণ করতে চেষ্টা করছে। আজ আপনি দেখতে পারছেন শুধু আওয়ামী লীগ নয়, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাসী, অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল, উন্নয়ন সমৃদ্ধ বাংলাদেশের পক্ষের হাজার হাজার মানুষ এখানে সমবেত হয়েছি। ব্রিটিশ লর্ড, এমপি ও গণমাধ্যমের মাধ্যমে পুরো বিশ্বকে আমরা জানাতে চাই বাংলাদেশে ছাত্রদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করে কীভাবে ধ্বংসযজ্ঞ ও হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে এই দেশদ্রোহী চক্র। আমরা বলতে চাই, আমরা সাধারণ মানুষ শান্তির পক্ষে, সমৃদ্ধির পক্ষে আছি, বাংলাদেশের পাশে আছি।

এসএসএইচ