বার্লিনে জুলাই অভ্যুত্থানে চাওয়া ও সম্ভাব্য পাওয়া নিয়ে মতবিনিময় সভা
জার্মানির রাজধানী বার্লিনে জুলাই বিপ্লবের চাওয়া ও সম্ভাব্য পাওয়া নিয়ে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৭ জুন) সন্ধ্যায় বার্লিনের পাংকো এলাকার একটি লাইব্রেরিতে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন বার্লিন প্রবাসীরা।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জার্মানিতে আমন্ত্রিত অতিথি হয়ে আসা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নাগরিক কমিটির সদস্য ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মোশাহিদা সুলতানা ঋতু, লেখক ও গবেষক কল্লোল মোস্তফা ও অর্থনীতিবিদ সুজিত চৌধুরী।
বিজ্ঞাপন
বক্তারা গেল বছরের জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পটভূমি ও শেখ হাসিনা সরকারের পতন, বাংলাদেশ ও গণমানুষের চাওয়া-পাওয়া নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করেন। এসময় জুলাই পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সফলতা ও ব্যর্থতা তুলে ধরতে গিয়ে তারা বলেন, সাধারণ জনগণ অভ্যুত্থানের সুফল এখনো পায়নি, সবকিছু ছাপিয়ে রাষ্ট্রের সব কিছুতে নব্য ফ্যাসিবাদী আর মবের রাজত্ব কায়েম করেছে এক শ্রেণির নব্য স্বৈরশক্তি। সমাজের সব স্তরে বৈষম্য দূর করা তো দূরে থাক, প্রত্যাশিত সাম্য, ন্যায়বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
প্রবাসীদের নানা প্রশ্নের উত্তরে বক্তারা বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের আমূল পরিবর্তনের অংশ হিসেবে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশন, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন ও সংবিধান সংস্কার কমিশনসহ মোট ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হলেও দৃশ্যমান অগ্রগতি সময়সাপেক্ষ বিষয়।
তবে জুলাই পরবর্তী সময়ে নারী, স্বাস্থ্য খাত, নানা লিঙ্গের মানুষ, প্রান্তিক কৃষক, শিক্ষা, অর্থনীতি, মুক্তিযুদ্ধ ও নানা মত, পথ ও ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপর যেভাবে মব সন্ত্রাস চালানো হচ্ছে তা অত্যন্ত হতাশার ও আশঙ্কার। অন্তর্বর্তী সরকার পুরোনো পরিকল্পনা অব্যাহত রেখেছে এবং নতুন কোনো টেকসই অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেনি। বন্ধ চিনিকল ও পাটকলগুলো পুনরায় চালুর কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নেই বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন জার্মানি সফররত বক্তারা।
সভায় অভ্যুত্থানের প্রত্যাশা পূরণে ও রাষ্ট্র এবং সমাজ বিনির্মাণে সমাজের সব স্তরের সব শ্রেণিপেশার নাগরিকদের পাশাপাশি প্রবাসীদেরও দায়িত্বশীল ইতিবাচক ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।
সভায় সর্বস্তরের প্রবাসীরা অংশগ্রহণ করেন। সফরে ৩০ জুন জার্মানির মানহাইমে হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘হাসিনা পরবর্তী বর্তমান বাংলাদেশ’ ও ১২ জুলাই বন্দরনগরী হামবুর্গের উন্নয়ন ফোরাম বাংলাদেশের আয়োজনে আরও দুটি সেমিনারে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে আমন্ত্রিত অতিথিদের।
এসএসএইচ