ফিনল্যান্ডে শুরু হলো হেলসিঙ্কি+৫০ আন্তর্জাতিক সম্মেলন
৫০ বছর আগে স্নায়ুযুদ্ধের উত্তাল সময়ে স্বাক্ষরিত হেলসিঙ্কি অ্যাকর্ডের স্মরণে ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিঙ্কিতে শুরু হয়েছে হেলসিঙ্কি+৫০ আন্তর্জাতিক সম্মেলন।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) শুরু হওয়া এই সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি।
বিজ্ঞাপন
ইউক্রেন যুদ্ধ, আন্তর্জাতিক আইন, এবং বৈশ্বিক নিরাপত্তার প্রশ্নে ও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে শুরু হয় এই ঐতিহাসিক সম্মেলন। সম্মেলন ঘিরে হেলসিঙ্কি জুড়ে নেওয়া হয়েছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ ও স্পেশাল টাস্কফোর্স মোতায়েন করা হয় রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায়। আয়োজকরা বলছেন, অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই ছিল তাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।
সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে ফিনল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলিনা ভাল্টোনেন বলেন, ‘এটা শুধু অতীত স্মরণ নয়, বরং ভবিষ্যতের জন্য দায়বদ্ধতা।’ তিনি ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, হেলসিঙ্কি অ্যাকর্ডের মূলনীতি—রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও মানবাধিকারের সম্মান আজ সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে।
বিজ্ঞাপন
সম্মেলনে ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেট্টেরি অরপো বলেন, রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে আন্তর্জাতিক চুক্তির নীতিমালা লঙ্ঘন করেছে। তিনি ইউরোপের দেশগুলোকে সতর্ক করে বলেন, এখন সময় এসেছে, তারা বেছে নিক : গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম, না হলে শক্তির রাজনীতি ও আগ্রাসনের কাছে নতজানু হওয়া।
তিনি আরও বলেন, হেলসিঙ্কি অ্যাকর্ড ছিল একটি আশার প্রতীক। আজ আবার আমাদের সেই মূল্যবোধকে রক্ষা করতে হবে। ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানো শুধু নৈতিক দায় নয়, এটি ইউরোপের ভবিষ্যতের প্রশ্ন।
এসময় ভিডিও বার্তায় বক্তব্য দেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রাশিয়াকে ইতিহাসের ভুল দিক বেছে নেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করে তিনি বলেন, রুশ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে শান্তি প্রচেষ্টায় ব্যবহার করতে হবে। তিনি একাধিকবার পশ্চিমা জোটের ঐক্য ও কার্যকর পদক্ষেপের ওপর জোর দেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস তার বক্তব্যে বলেন, আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধা এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতিই আজকের বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, যুদ্ধ নয়, আলোচনাই হতে হবে সমাধানের পথ।
‘সম্মেলনে অংশ নেওয়া নেতারা একমত হন বিশ্বজুড়ে শান্তি, মানবিক সহায়তা ও আইনি সহায়তার জন্য একটি ‘গ্লোবাল লোক ফান্ড গঠন করা হবে যা বিশেষ করে যুদ্ধাক্রান্ত দেশগুলোর জন্য ব্যবহৃত হবে। ফিনল্যান্ড এই ফান্ডের প্রাথমিক অংশীদার হওয়ারও ঘোষণা দেয়।’
এমএন