চট্টগ্রাম জমিয়তুল ফালাহ ময়দানে তরিক্বত কনফারেন্সে আশেকে রাসুলের ঢল
প্রিয় রাসুল (দ.) আইয়্যামে জাহেলিয়াত যুগে এসে গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত মানব সম্প্রদায়কে যে দর্শন দিয়ে হেদায়েতের পথে নিয়ে এসেছেন তা মহাকাল ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রিয় নবীজি (দ.) যে দর্শন-আদর্শ-নিয়ামত দিয়ে মানুষকে হেদায়েত করেছেন সেই নিয়ামতসমূহ কালের পরিক্রমায় এসে পৌঁছেছে খলিলুল্লাহ, আওলাদে মোস্তফা, খলিফায়ে রাসুল (দ.) হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর কাছে। তিনি তাওয়াজ্জুহ তথা অন্তর্দৃষ্টির মাধ্যমে প্রিয় রাসুল (দ.)-এর নূরে বাতেন দিয়ে অন্ধকার কলবকে আলোকিত করে কলবে সলিমে পরিণত করেছেন। ফলশ্রুতিতে গুনাহে লিপ্ত মানুষ তওবায়ে নসুহার মাধ্যমে ফিরে আসে সিরাতুল মোস্তাকিমের দিকে, সুন্নাতে মোস্তফার শাশ্বত পথে।
একজন সাধারণ মানুষ হযরত গাউছুল আজম (রা.)-এর তরিক্বতে অন্তর্ভুক্ত হলে এমনভাবে পরিবর্তিত হয় যা প্রতিদিনের জীবনযাপনে স্পষ্ট হয়ে উঠে। নফসানিয়াত তথা পশুত্বকে বর্জন করে অর্জন করে ইনসানিয়াত তথা মনুষ্যত্বের অমূল্য নিয়ামত। দরূদে মোস্তফা ও সুন্নাতে মোস্তফার অনুশীলনে পরিণত হয় আশেকে রাসুলে। এই মকবুল তরিক্বতে রয়েছে প্রতিদিন এগারো শত এগারো বার দরূদ শরীফ, কখনো কাজা হলে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে আদায়, ফয়েজে কুরআন, মোরাকাবা, জিকিরুল্লাহর অনুশীলন, তাওয়াজ্জুহ-বিল-গায়েবের মাধ্যমে মহিলারা নিজ ঘরে বসে প্রিয় রাসুল (দ.)-এর নূরে বাতেন গ্রহণ করার অপূর্ব সুযোগ। প্রিয় রাসুল (দ.)-এর এই নূরে বাতেন গ্রহণ করার জন্য মহিলাদের দরবার শরীফে আসতে হয় না, দরবার শরীফ থেকে হযরত গাউছুল আজম (রা.)-কেও কোনো মহিলার সামনে যেতে হয়নি। এই নিয়ামত দরবার শরীফে আজও পাওয়া যাচ্ছে মাশাআল্লাহ। যুগোপযোগী এবং বিজ্ঞানময় এমন তরিক্বত বর্তমান পৃথিবীতে বিরল। এই তরিক্বতের সুধা পান করে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা হেদায়েতের পথে নিজেদেরকে পরিচালিত করছে। বিশেষ করে যুব সম্প্রদায় দলে দলে এই তরিক্বত গ্রহণ করে নিজেদেরকে এমনভাবে গঠন করছে যা রীতিমতো বিস্ময়কর। এ যেন খলিফায়ে রাসুল (দ.)-এর করে যাওয়া মহান বাণীর বাস্তবায়ন- ‘হে যুবক! নামাজ পড়, রোজা রাখ, নবী করিম (দ.)-এর উপর দরূদ পড়, মাতৃভূমি শান্ত কর’। অশান্ত এ পৃথিবীতে গাউছিয়্যতের এ আহ্বান যেন শান্তি প্রতিষ্ঠার অবিস্মরণীয় আহ্বান।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টা থেকে চট্টগ্রাম জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ ময়দানে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক তরিক্বত কনফারেন্সে উপস্থিত লাখো মুসলমানের উদ্দেশে প্রধান মেহমানের বক্তব্যে কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের মোর্শেদ আওলাদে রাসুল (দ.) আল্লামা অধ্যক্ষ শায়খ ছৈয়্যদ মোর্শেদে আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ও সংগঠনের মহাসচিব প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত তরিক্বত কনফারেন্সে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. মুহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জমিয়তুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব হযরতুলহাজ্ব আল্লামা শাব্বির আহমদ মোমতাজী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. জালাল আহমদ।
বিজ্ঞাপন
বক্তব্য দেন মুফতি মাওলানা কাজী মুহাম্মদ আনোয়ারুল আলম ছিদ্দিকী, মাওলানা মুহাম্মদ আবদুস সবুর, মাওলানা মুহাম্মদ ফোরকান, মাওলানা মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন নুরী, মাওলানা মুহাম্মদ রকিব উদ্দিন, মাওলানা মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন ও মাওলানা মুহাম্মদ গোলাম রাব্বানি ফয়সাল।
মিলাদ-কিয়াম শেষে প্রধান মেহমান দেশ, জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি-সমৃদ্ধি এবং কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম রাদিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহুর ফুইজত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন।
এসএসএইচ