পর্তুগালে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে সংসদে নতুন আইন অনুমোদন
পর্তুগালের জাতীয় সংসদ অভিবাসীদের নিয়ন্ত্রণে গত জুলাই মাসে সাংবিধানিক আদালত এবং রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত আইনটি আংশিক সংশোধন করে মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সংসদীয় আসনের ডানপন্থীদের সমর্থনে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে পুনরায় অনুমোদন দিয়েছে।
এ অভিবাসন আইনে জনপ্রিয় ‘জব সার্চ ভিসা’ বাদ দেওয়া হয়েছে, তবে একে উচ্চ যোগ্যতা সম্পন্ন ভিসা হিসেবে পরিবর্তিত করা হয়েছে। অর্থাৎ যাদের উচ্চ যোগ্যতা রয়েছে, তারাই এ ভিসায় আবেদন করতে পারবেন। উচ্চ যোগ্যতা সম্পন্ন বিষয় কি হবে এটি সরকার নির্ধারণ করবেন।
বিজ্ঞাপন
পারিবারিক পুনর্মিলন ভিসার ক্ষেত্রে কিছু কঠোরতা দেওয়া হয়েছে। পর্তুগালের নিয়মিত হওয়ার পর বা রেসিডেন্ট কার্ড পাওয়ার পর পরিবার আনার ক্ষেত্রে– পর্তুগালে আসার আগে বৈবাহিক সম্পর্ক না থাকলে পরিবার আনার ক্ষেত্রে দুই বছর এবং বৈবাহিক সম্পর্ক থাকলে এক বছর, তবে অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তান বা ডিপেন্ডেন্ট থাকলে সেক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গেই আবেদন করতে পারবে। এক্ষেত্রে অনুমোদন পেতে হলে আবেদনকারীকে নিজের নামে আবাসনসহ এবং যথাযথ আয় থাকতে হবে। তবে গোল্ডেন ভিসা বা উচ্চ যোগ্যতাসম্পন্ন অভিবাসীদের জন্য এটি প্রযোজ্য নয়।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
পর্তুগিজ ভাষাভাষী দেশগুলোর নাগরিকদের জন্য সহজ শর্তে নিয়মিত হওয়ার সুযোগ থাকছে না। অর্থাৎ ভ্রমণ বিষয়ে এসে কেউ আর পর্তুগালে রেসিডেন্ট কার্ড পাবেন না। পর্তুগালে কাজ করতে হলে বা নিয়মিত হতে হলে অবশ্যই তাকে পর্তুগিজ কনসুলার থেকে রেসিডেন্ট ভিসা / ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে পর্তুগালে আসতে হবে।
পর্তুগালের অভিবাসী সংগঠন সলিডারিয়েডাড ইমিগ্রান্টের সভাপতি টিমোটিও মাসেডো এই আইনের সমালোচনা করে বলেন, বিদেশীদের উপর নতুন আইন দেশের উন্নয়নের ক্ষতি করে এবং দরিদ্রদের অধিকারকে ক্ষুণ্ন করে। এ আইন একটি শ্রেণী বিভাজন তৈরি করেছে, যার অর্থ ধনী অভিবাসীরা সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে। এসব অভিবাসীরা যারা সমাজের কল্যাণের জন্য কাজ করে এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করে তারা সুবিধাবঞ্চিত।
নতুন অভিবাসন আইনে প্রবাসী বাংলাদেশীরা কিছুটা চিন্তিত বলে আনোয়ার খান আজাদ জানান, বাংলাদেশ থেকে পর্তুগালে পরিবার আনার ক্ষেত্রে নতুন আইনের কঠোরতা এবং দীর্ঘ শূত্রীতার কারণে পারিবারিক জীবনে একে জটিল সমস্যার সৃষ্টি করবে। সরকারকে তিনি পারিবারিক পুনর্মিলনের ক্ষেত্রে আরো সহনশীল হওয়ার প্রতি আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, গত জুলাই মাসে সংসদে অনুমোদিত অভিবাসন আইনটি পর্তুগালের সাংবিধানিক আদালত এই আইনের বেশ কিছু বিষয় ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করেন, পরে রাষ্ট্রপতি এটি ভেটো দিয়ে আবার সংসদে ফেরত পাঠান। সরকার আইনটি আবারও পর্যালোচনা করে পুনরায় সংসদে উপস্থাপন করে। ডানপন্থীদের সমর্থনে সংসদের ২৩০টি আসনের মধ্যে ১৬০ জন সংসদ সদস্যের সমর্থনে অনুমোদন করে। এখন রাষ্ট্রপতি বিলটিতে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়ার পর এটি আইন হিসেবে কার্যকর হবে।
বিআরইউ