শীতের প্রকোপ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে করোনার ছোবল পর্তুগালে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। করোনা আবারো ভয়াবহ আকারে বৃদ্ধি পেলে দ্বিতীয়বারের মতো দেশটির সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম থাকলেও প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

মহামারির প্রথম আঘাতের সময়ও দেশটির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তখন পূর্বপ্রস্তুতির না থাকায় নতুন পরিস্থিতিতে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম কষ্টসাধ্য হয়েছিল। টেলিভিশনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করা হয়েছিল। তবে দূর শিক্ষণ কার্যক্রম সাধারণত একমুখী যা পর্তুগালের শিক্ষা ও শিশুদের জন্য অনেকটাই বেমানান ছিল। 

নতুন পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে পর্তুগালের সব শিক্ষার্থীদের জন্য কম্পিউটার ও ইন্টারনেট নিশ্চিত করা হয়েছে। যেসব শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার নেই তাদের  সরকারের পক্ষ থেকে একটি ল্যাপটপ কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ফলে সব শিক্ষার্থীদের অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। 

অনলাইন পাঠদান প্রক্রিয়ার যতগুলো শক্তিশালী মাধ্যম রয়েছে সবগুলোকে কাজে লাগানো হয়েছে। যেমন- গুগল ক্লাসরুম, খান একাডেমি, ভার্চুয়াল স্কুল (পর্তুগালের ডিজিটাল পাঠ্যপুস্তক প্ল্যাটফর্ম), লেইয়া (ডিজিটাল পাঠ্যপুস্তক) ও  জুম অ্যাপ।

স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের এসব প্ল্যাটফর্মে যুক্ত করার কাজ করছেন। আগে থেকে কিছুটা প্রস্তুতি থাকলেও এভাবে পুনরায় স্কুল বন্ধ করার বিষয়ে অবস্থানটা একটু ভিন্ন ছিল। তাই শিশুরা যাতে আবারো পিছিয়ে না পরে সে কারণে সর্বাত্মক চেষ্টার মাধ্যমে শিক্ষক ও স্কুল কর্তৃপক্ষ নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

শুধু একাডেমিক শিক্ষাই নয় অনলাইন কার্যক্রমের সঙ্গে শরীরচর্চা ও বিভিন্ন মানসিক বিকাশমূলক শিক্ষাও যুক্ত করা হয়েছে। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে নির্দিষ্ট বিরতি দিয়ে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত একাডেমিক শিক্ষা কার্যক্রম চলবে। শরীরচর্চার উপরে বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা এমন একটি পদ্ধতি বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছেন, যাতে শিশুরা শ্রেণিকক্ষের মতই শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। সরাসরি শ্রেণিকক্ষে ক্লাস চালু হলেও ডিজিটাল শিক্ষা পদ্ধতি অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক একাডেমিক কার্যক্রমের মতোই বাধ্যতামূলক করা হবে।

শিশুবান্ধব দেশ পর্তুগালে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অধিকারের দিক থেকে শিশুরা সবসময়ই এগিয়ে। তাই শিশু স্বাস্থ্য, মানসিক বিকাশ ও সর্বোপরি একাডেমিক শিক্ষার ধারা অব্যাহত রাখার জন্য সরকার শেষ মুহূর্তে স্কুল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তথাপি স্কুল বন্ধ হওয়ার পর শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় তার জন্য ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়েছেন।

ওএফ