প্রতীকী ছবি

সালাম ইসলামের অভিবাদন ও শান্তির প্রতীক। সালামের মাধ্যমে নিরাপত্তা ও শান্তির বার্তা ছড়ানো হয়। এক মুসলিম অপর মুসলিমকে সালাম দেওয়া সুন্নত। আর উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। সালাম দেওয়া-নেওয়া জান্নাতি মানুষের অভ্যাস। ইসলামে সালামের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক।

মুসলিমরা জান্নাতে যাওয়ার সময় ফেরেশতারা বলবে, ‘তোমাদের প্রতি সালাম’, তোমরা সুখী হও।’ -(সুরা জুমার, আয়াত : ৭৩) 

আরেক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর যখন তোমাদেরকে সালাম দেয়া হবে তখন তোমরা তার চেয়ে উত্তম সালাম দেবে। অথবা জবাবে তাই দেবে’। -(সূরা নিসা, আয়াত: ৮৬) 

সালামের বিশেষ ফজিলত সম্পর্কে হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা ঈমানদার না হওয়া পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। আর যতক্ষণ না তোমাদের পারস্পরিক ভালোবাসা গড়ে উঠবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা প্রকৃত ঈমানদার হতে পারবে না। আমি কি তোমাদেরকে এমন একটি কাজ বলে দেব না, যা করলে তোমরা একে অপরকে ভালবাসতে লাগবে? (তা হচ্ছে) তোমরা আপোসের মধ্যে সালাম প্রচার কর।’ -(মুসলিম, হাদিস : ৫৪; তিরমিজি, হাদিস : ২৬৮৮; আবু দাউদ, হাদিস : ৫১৯৩; ইবনু মাজাহ, হাদিস : ৩৬৯২; আহমাদ, হাদিস : ৮৮৪১)

সালামের মাধ্যমে পরস্পরের মাঝে সৌর্হাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়। ইসলামী শরীয়তে সালাম দেওয়া সুন্নত। সালামের উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। 

আমাদের সমাজে একটি ধারণা প্রচলিত আছে, কেউ খেতে বসলে তাকে সালাম দেওয়া যাবে না, এবং সালামের উত্তর নেওয়া যাবে না। এ বিষয়ে অনেকেই আলেমদের মতামত ও ইসলামী বিধান জানতে চান।

এই মাসআলার ক্ষেত্রে আলেমদের মতামত হলো, খাবারের সময় সালাম দেওয়া যাবে এবং নেওয়া যাবে। প্রচলিত যে ধারণা রয়েছে যে, ‘খাদ্য গ্রহণকারীকে সালাম দেয়া যাবে না’ এর কোন অস্তিত্ব নেই। তবে যদি কারো মুখের ভেতরে খাবার থাকে, তাহলে তাকে সালাম না দেওয়া ভাল। এ অবস্থায় কেউ সালাম দিলে উত্তর প্রদান ওয়াজিব নয়। (সাখাবী, আল মাকাসিদ, পৃ. ৪৬০, মোল্লা আলী কারী, আল-আসরার, পৃ. ২৬৫)

এ সম্পর্কে (কাশফুল খুফা) কিতাবে বলা হয়েছে (لا سلام على أكل) ليس بحديث) অর্থাৎ খাবার চলাকালীন সময়ে সালাম দেওয়া যাবে না, এটা কোন হাদিস নয়।

ইমাম নববী রহ. তাঁর আযকার কিতাবে বলেন, খাবার চলাকালীন মুখে খাবার থাকা অবস্থায় সালাম দিলে জবাব দেওয়া জরুরি নয়। তবে যদি মুখে লোকমা না থাকা অবস্থায় সালাম দেয় তাতে কোন সমস্যা নেই এবং উত্তর প্রদান জরুরি।

শায়খ আব্দুর রহমান আস সাহিম বলেন, সমাজে প্রচলিত খাবার সময় সালাম দেওয়া যায় না বলে যে কথাটি রয়েছে তা সালামের ব্যাপারে নয়, মোসাফাহার ব্যাপারে। সুতরাং সালাম দেওয়া ও নেওয়াতে কোন সমস্যা নেই। -(সাখাবী, আল-মাকাসিদ, পৃ. ৪৬০, মোল্লা কারী, আল আসরার, পৃ. ২৬৫, আল-আজলূনী, কাশফুল খাফা ২/৪৮৮, যারকানী, মুখতাসারুল মাকাসিদ, পৃ. ২০৩, দেওবন্দ ফতোয়া, ১০১৬৬ )

উত্তর দিয়েছেন : শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী