মনে মনে সিজদার আয়াত পড়লেও কি সিজদা ওয়াজিব হয়?
প্রতীকী ছবি
কোরআন আল্লাহ তায়ালার অবতীর্ণ সর্বশেষ কিতাব। কোরআনের মাধ্যমে মানুষ শুধু মহান রবের বিধি-বিধান, আদেশ নিষেধ জানে না, এর তেলাওয়াত মানুষের মনকে প্রশান্ত করে, রবের সঙ্গে বান্দার নৈকট্য বৃদ্ধি করে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে ‘যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর জিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর জিকির দ্বারাই অন্তর সমূহ শান্তি পায়।’ (সুরা রা‘দ, আয়াত : ২৮)
বিখ্যাত সাহাবি হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাস‘ঊদ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাব থেকে একটি অক্ষর তেলাওয়াত করল তার বিনিময়ে সে একটি নেকী পাবে, আর একটি নেকীর বদলা হবে দশগুণ, একথা বলছি না যে, আলিফ-লাম-মীম, একটি অক্ষর বরং আলিফ একটি অক্ষর, লাম একটি অক্ষর, মীম একটি অক্ষর।’ (তিরমিজি, হাদিস: ২৯১০)
বিজ্ঞাপন
কোরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখতে হয় তার একটি হলো সিজদার আয়াত তেলাওয়াতের পর ঠিকমতো সিজদা আদায় করা। কোরআনে যে ৬ হাজার ৬’শত ৬৬টি আয়াত রয়েছে তার মাঝে এমন ১৪টি আয়াত আছে যেগুলোর তেলাওয়াত করলে বা শুনলে একটি সিজদা করতে হয়। এই সিজদাকে সিজদায়ে তেলাওয়াত বলা হয়। এই সিজদা ওয়াজিব, না করলে গুনাহ হবে।
বিজ্ঞাপন
এখন প্রশ্ন হলো,
কেউ যদি কোরআন তেলাওয়াতের সময় বা অন্য কোনও সময় সিজদার আয়াতগুলো আওয়াজ করে তেলাওয়াত না করে শুধু মনে মনে তেলাওয়াত করে তাহলে মনে মনে পড়ার কারণে তার ওপর সিজদায়ে তেলাওয়াত ওয়াজিব হবে কি না?
এ বিষয়ে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, সিজদার আয়াত মুখে উচ্চারণ না করে মনে মনে জপলে সিজদায়ে তেলাওয়াত ওয়াজিব হয় না। তাই সিজদার আয়াত মনে মনে পড়লে সিজদা দেওয়া ওয়াজিব হবে না।
তবে আলেমরা বলেন, তেলাওয়াতের মাঝে সিজদার আয়াত আসলে তা স্বাভাবিকভাবে তিলাওয়াত না করে মনে মনে পড়ে নেওয়া ঠিক নয়। -(খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৮৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩২; হাশিয়াতুত্তাহতাবী আলাদ্দুর ১/৩২২; শরহুল মুনইয়্যাহ পৃ. ৫০০; রদ্দুল মুহতার ২/১০৪)
তেলাওয়াতে সিজদা আদায়ের পদ্ধতি
তেলাওয়াতে সিজদার পদ্ধতি হলো- হাত না উঠিয়ে দাঁড়ানো থেকে আল্লাহু আকবার বলে সোজা সিজদায় চলে যেতে হবে এবং ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আলা’ তিনবার পড়ে আল্লাহু আকবার বলে দাঁড়াতে হবে।
এতে তাশাহ্হুদ নেই, সালামও নেই। এ সিজদার জন্য হাত উঠাতে বা হাত বাঁধতে হবে না এবং দুইটি সিজদাও করতে হবে না। যদি না দাঁড়িয়ে বসে বসে সেজদা করে অথবা সেজদা করে বসে থাকে তাও জায়েজ আছে।
এনটি