সমাজে প্রচলিত ভুল
রাতের বেলা আঙ্গুল ফোটানো যাবে কি?
প্রতীকী ছবি
নারী-পুরুষের দায়েমী সুন্নতের একটি হলো হাত-পায়ের নখ কাটা। হাত-পায়ের নখ কাটা পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার অন্তর্ভুক্ত এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর সপ্তাহে একবার (হাত পায়ের) নখ কাটা এবং পরিস্কার করা সুন্নত।
নখ কাটার পদ্ধতি সম্পর্কে আলেমদের মতামত হলো- উভয় হাত (মুনাজাতের আকৃতিতে ধরে) ডান হাতের শাহাদাত আঙ্গুল থেকে আরম্ভ করে ধারাবাহিকভাবে বাম হাতের বৃ্দ্ধাঙ্গুলির নখ কেটে শেষ করা। অতঃপর সর্বশেষে ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলির নখ কাটা। (ফাতওয়ায়ে শামী, ৬: ৪০৬, ফাতওয়ায়ে আলমগীরী, ৫: ৩৫৮)
বিজ্ঞাপন
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নখ কাটা এবং পবিত্র থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। হজরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘ইসলাম পরিচ্ছন্ন। সুতরাং তোমরা পরিচ্ছন্নতা অর্জন করো। নিশ্চয়ই জান্নাতে কেবল পরিচ্ছন্ন ব্যক্তিই প্রবেশ করবে।’ (ফাইজুল কাদির, হাদিস-৩০৬৫)।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নখ কাটার নির্দেশ দিলেও এর জন্য দিন রাতের নির্দিষ্ট কোনও সময় নির্ধারণ করে দেননি। অনেক এলাকার মানুষের মাঝে প্রচলিত কিছু ধারণা আছে যে, রাতে বেলা নখ, চুল, গোঁফ ইত্যাদি কাটা যাবে না। আবার কেউ মনে করেন রাতে বেলা আঙ্গুল ফোটানো, বাঁশ কাটা, গাছের পাতা ছেঁড়া, কোনো প্রকার ফল-ফসল তোলা যাবে না।
বিজ্ঞাপন
কোরআন-হাদিসের আলোকে আলেমরা বলেন, এসব মনগড়া কথা, শরীয়তে এর কোনো ভিত্তি নেই। কোরআন-হাদীসের কোথাও এ ধরনের কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। সুতরাং এ ধরনের বিশ্বাস পোষণ করা যাবে না।
এগুলো মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সাথে সম্পৃক্ত বিষয়। এর ওপর শরীয়তের কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই।
এক সময় বিদুৎ ছিলো না, তখন রাতে বেলা মানুষ পর্যাপ্ত আলো পেতেন না, এ কারণে হয়তো তখন নখ কাটতে গিয়ে ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কার কারণে নখ কাটতে নিষেধ করা হতো, কিন্তু এর সঙ্গে ধর্মীয় কোনও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। এছাড়া বর্তমানে মানুষ রাতের বেলাতেও পর্যাপ্ত আলো পেয়ে থাকেন, তাই এখন রাতের বেলা আগের মতো নখ কাটার কারণে শরীরের কোনও অঙ্গের ক্ষতি হওয়ারও আশঙ্কা নেই।
(সাখাবী, আল-মাকাসিদ, পৃ: ৩১৩, ৪২১ নং ৭৭২, ১১৬৩, মুল্লা আলী কারী, আল-আসরার, পৃ: ১৭০, ২৪১, নং ৬৫৪, ৯৫২, আল-মাসনূ‘য়, পৃ: ৯৯, ১৫৬, নং ২১৫, ৩৫৭, যারকানী, মুখতাসারুল মাকাসিদ, পৃ: ১৪৬, ১৮৮, নং ৭১৬, ১০৬৫)
এনটি