কোরআন তিলাওয়াত, কোরআনের তাফসির নিয়ে বেশি বেশি সময় যাপন একজন মুসলিমের জীবন ও মনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। মূলত বলা যায় মানুষের সুস্থ, সুন্দর মন ও মনন গঠনে কোরআন সবথেকে বেশি প্রভাব রাখে।

মানুষের মনে কোরআনের প্রভাব সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে, ‘আল্লাহ সর্বোত্তম বাণী অবতীর্ণ করেছেন- এমন কিতাব যা সামঞ্জস্যপূর্ণ, যার বিষয়াবলী পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে। যারা তাদের প্রতিপালককে ভয় করে তাদের গা এতে শিউরে উঠে। তখন তাদের দেহ-মন আল্লাহর স্মরণের প্রতি বিনম্র হয়ে যায়। এ হল আল্লাহর হিদায়াত, যাকে ইচ্ছে তদ্দবারা হিদায়াত করেন। আর আল্লাহ যাকে পথহারা করেন, তার কোন পথপ্রদর্শক নেই।’(যুমার, আয়াত, ২৩) 

কোরআন তিলাওয়াত ও নিজের অন্তরে কোরআন ধারনের প্রতি যারা অনীহা-অবহেলায় দেখায় তাদের অন্তর মৃত বস্তুর মতো। এ ব্যাপারে হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যার হৃদয়ে কোরআনের ইলম নেই। সে যেন বিরান ঘরের মতো।’ (মেশকাত, হাদিস, ২১৩৫) 

আল্লাহ তায়ালা এমন ব্যক্তিদের সম্পর্কে বলেছেন,  ‘আর তারা বলেছিল, ‘আমাদের অন্তরসমূহ আচ্ছাদিত’, বরং তাদের কুফরীর কারণে আল্লাহ তাদেরকে লা'নত করেছেন। সুতরাং তাদের কম সংখ্যকই ঈমান আনে’(সূরা বাকারা, আয়াত, ৮৮) 

মৃতপ্রায় ও তালাবদ্ধ অন্তরকে খোলার একমাত্র উপায় ও মাধ্যম হচ্ছে, কোরআন। এ ব্যাপারে হাদিসে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা যখন কোনো বান্দার কল্যাণ চান, তখন তার দিলের তালা খুলে দেন এবং তার হৃদয়ে বিশ্বাস ও সততার গুণ ঢেলে দেন।’ (ফয়জুল কাদীর, ১/২৫৯) 

এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে,‘‘তবে কি তারা কোরআন নিয়ে গভীর চিন্তা করে না? নাকি তাদের অন্তরসমূহে তালা রয়েছে?’( সূরা মুহাম্মদ, আয়াত, ২৪) 

আয়াতে উল্লেখিত অন্তরের তালা কথাটি রূপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এর মাধ্যমে এমন মানুষদের বোঝানো হয়েছে, যাদের অন্তরে ঈমান, আমল ও কোরআনের আলো নেই। আর আয়াতে তাদের অন্তরে আলো ও অন্তরের তালা খোলার মাধ্যম বলা হয়েছে কোরআনকে, নিয়মিত কোরআন তিলাওয়াত ও কোরআন চর্চাকে।

লেখক : মুহাদ্দিস, জামিয়া কাশেফুল উলূম মাদ্রাসা, মধুপুর,টাঙ্গাইল