কোরআনের আয়াত লেখা শোপিস ব্যবহারের বিধান
প্রতীকী ছবি
ঘর-অফিস সাজাতে বাজারে বিক্রিত বিভিন্ন ধরনের শোপিস ব্যবহার করেন অনেকে। অনেককে কোরআনের আয়াত অঙ্কিত শোপিসও ব্যবহার করতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে আলেমদের মতামত হলো- কোরআনের আয়াত-লিখিত বা ক্যালিগ্রাফি করা ওয়ালম্যাট বা শোপিস ব্যবহার করা মাকরূহ। এর প্রথম কারণ হিসেবে তারা বলেন, এটা কোনোভাবে মাটিতে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। এছাড়াও খামখেয়ালিপনার কারণে এর মর্যাদার প্রতি যথাযথ যত্ন না নেয়ার ফলে কোরআনের আয়াতের অসম্মানের সম্ভাবনাও রয়েছে। তাই যেমনিভাবে অমনোযোগী ব্যক্তির সামনে কোরআন তেলাওয়াত উচিত নয়, একইভাবে কোরআনের আয়াত-লিখিত বা ক্যালিগ্রাফি করা ওয়ালম্যাট বা শোপিস ব্যবহার করার ক্ষেত্রেও একই বিধান প্রযোজ্য।
বিজ্ঞাপন
এক বর্ণনায় এসেছে, ওমর ইবনে আবদুল আজিজ রহ. দেয়ালে বিসমিল্লাহ লেখার কারণে নিজের ছেলেকে প্রহার করেছেন। এই রকম আরেক বর্ণনা বিশিষ্ট তাবেয়ী ইবরাহীম নাখায়ী রহ.সম্পর্কেও উদ্ধৃত হয়েছে। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৪৬২৩, ৪৬২২;আলমাবসূত, সারাখসী ১/১৫; ফাতহুল কাদীর ১/২৫৩)
বিজ্ঞাপন
তবে কেউ যদি এ উদ্দেশ্যে এগুলো ব্যবহার করে যে এর মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার কথা স্মরণ হবে, এতে লিখিত বাণীর হিদায়াত ও শিক্ষা গ্রহণ করা যাবে, তাহলে ব্যবহার করা যেতে পারে।
কোরআনের আয়াত লেখা শোপিস ব্যবহারের ক্ষেত্রে আলেমরা কয়েকটি বিষয়ে গুরুত্ব দিতে বলেছেন। বিষয়গুলো হলো- আয়াত ও হাদিসের মর্যাদার প্রতি খেয়াল রাখতে হবে, যেন তা নিচে পড়ে না যায় বা অপবিত্র কিছুর সঙ্গে স্পর্শ না হয়, আর ধুলোবালি থেকে নিয়মিত পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। কোরআন-হাদিস লিখিত ক্যালেন্ডারের ক্ষেত্রেও একই বিধান। কোরআন-হাদিসের মর্যাদার প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। বাতাসে যেন উড়াউড়ি না করে সে ব্যবস্থাও করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন
তবে ক্যালেন্ডারে কোরআনের আয়াত বা হাদিস না লেখাই উত্তম। কারণ মানুষ এটিকে সেভাবে মর্যাদা দিয়ে ব্যবহার করে না এবং মাস ও বছর শেষে তা হেফাজত করে না; যেখানে-সেখানে তা ফেলে দেয়।
কোরআন-হাদিস লিখিত ক্যালেন্ডার দ্বারা কিতাব বা বই-পুস্তক বাঁধাই করা মাকরুহ। এটা কোরআন-হাদিসের মর্যাদাপরিপন্থী। এ ধরনের ক্যালেন্ডার প্রয়োজন শেষে হেফাজত করতে হবে।
যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে পুড়িয়ে ছাইগুলো কোনো পবিত্র স্থানে দাফন করে দেবে। (ফতোয়ায়ে খানিয়া : ৩/৪২৪; আল বাহরুর রায়িক : ২/৩৭; ফতোয়ায়ে তাতারখানিয়া : ১৮/৬৭, ৬৯; ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া : ১/১০৯, ৫/৩২২; দুররুল মুখতার : ৪/১৩০)
এনটি