হজ ও ওমরার সময় কাবা শরিফ তাওয়াফ করতে হয়। এটি হজ ও ওমরার গুরুত্বপূর্ণ আমল। হজের সময় কাবা তাওয়াফ করা ফরজ। ওমরার সময়ও তাওয়াফ করা ওয়াজিব। ওমরার ইহরাম বাঁধার পর পবিত্র কাবাগৃহ সাতবার প্রদক্ষিণ করতে হয়। আর হজের সময় ইহরাম বেঁধে, মিনা, মুজদালিফা এবং আরাফার ময়দানে অবস্থানের পর ১০ জিলহজ ভোর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত যেকোনো সময় কাবাঘর তাওয়াফ বা সাতবার প্রদক্ষিণ করা ফরজ।

পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘আর আমি ইবরাহিম ও ইসমাঈলকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম যে তোমারা আমার ঘরকে তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকু-সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র করো।’ (সূরা বাকারা, আয়াত : ১২৫)

সাত চক্কর শেষ হওয়ার পর মাকামে ইবরাহীমের পেছনে দাঁড়িয়ে বাইতুল্লাহ শরিফের অভিমুখী দু রাকাত নামাজ আদায় করা হয়। তাওয়াফের এই দুই রাকাত নামাজ হানাফী মাজহাব মতে ওয়াজিব। 

মাকামে ইবরাহীম থেকে পেছন দিকে পড়া সুন্নত। তবে সেখানে পড়া সম্ভব না হলে হারাম শরিফের যেকোনো জায়গায়, সাফা মারওয়ায়, দ্বিতীয় তলায়, তৃতীয় তলায় কিংবা ছাদের উপরেও পড়া যাবে। এমনকি কেউ যদি মাকরূহ ওয়াক্তে তাওয়াফ শেষ হওয়ার কারণে অথবা ভুলের কারণে মসজিদে হারামের মধ্যে এই নামাজ না পড়ে, হোটেলে গিয়ে আদায় করে তাতেও অসুবিধে নেই। 

আর কারো যদি নিজ দেশে যাওয়ার পরও স্মরণ হয় তাহলে সেখানেও তিনি সেই দুই রাকাত নামাজ পড়ে নিতে পারবেন।

হজরত ওমর রা. ফজরের পরে তাওয়াফ করেছেন। এই সময় মাকরূহ ওয়াক্ত চলছিল বিধায় আবতাহ নামক স্থানে গিয়ে ইশরাকের সময় তাওয়াফের দুই রাকাত আদায় করেছেন। উল্লেখ্য, তাওয়াফের দুই রাকাত ওয়াজিব নামায ছেড়ে দেওয়ার কারণে কোনো দম বা জরিমানা আবশ্যক হয় না।

তাওয়াফের সময় যার যেটা মনে চায় একান্তভাবে আল্লাহ তায়ালার সামনে পেশ করতে পারে। তবে হজরত আতা রহ. বলেন, আবু হুরায়রা রা. আমার নিকট হাদিস বর্ণনা করেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সা.–কে বলতে শুনেছেন,...যে ব্যক্তি সাতবার বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করে এবং কোন কথা না বলে নিম্নোক্ত দোয়া পড়ে 

سُبْحَانَ اللّٰهِ وَالْحَمْدُ لِلّٰهِ وَلَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ وَاللّٰهُ أَكْبَرُ وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللّٰه

উচ্চারণ : সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদু লি-ল্লাহি ওয়ালা ইলাহা- ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার, লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ

 তার দশটি গুনাহ মুছে যাবে। তার জন্য দশটি নেকী লেখা হবে এবং তার মর্যাদা দশগুণ বর্ধিত করা হবে। আর যে ব্যক্তি তাওয়াফ করে এবং এ অবস্থায় কথা বলে, (উপরোক্ত জিকির করে বা অন্য কোনো মাসনুন জিকির করে।) সে তার দুই পা রহমতের মধ্যে ডুবিয়ে রাখে; যেমন কারো পা পানিতে ডুবিয়ে রাখে। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৯৫৭)