ধনী ব্যক্তির দরিদ্র সন্তানকে যাকাত দেওয়া যাবে?
কোনো ধনী ব্যক্তি যদি তার প্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানের ভরণপোষণ না দেয় এবং সেই সন্তানের কাছেও স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরার মতো নেসাব পরিমাণ সম্পদ না থাকে। তাহলে তাকে প্রয়োজনে যাকাতের টাকা দেওয়া যাবে।
আর যদি ধনী ব্যক্তির সন্তান অপ্রাপ্ত বয়স্ক হয়, তাহলে ধনী ব্যক্তির অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানকে যাকাত দেয়া যাবে না। আর কোনো বাবা যদি নেসাব পরিমাণ মালের মালিক না হয় তাহলে তার অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানকে গরীব হিসেবে যাকাত দেয়া যাবে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
জাকাত ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি। সম্পদের পরিশুদ্ধি ও অসহায়দের মাঝে স্বচ্ছলতা ফেরানো, দারিদ্র বিমোচন জাকাতের অন্যতম উদ্দেশ্য। দ্বিতীয় হিজরিতে মুসলমানদের ওপর জাকাত ফরজ হয়। জাকাতের সঠিকভাবে আদায়ে বিশেষ পুরস্কার ঘোষণা করেছেন আল্লাহ তায়ালা। এ সর্ম্পকে বর্ণিত হয়েছে, ‘এবং তোমরা আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য জাকাত আদায় করো। অত:পর তিনি তা দ্বীগুণ করে দেবেন। (সুরা: আর-রুম,আয়াত : ৩৯)
বিজ্ঞাপন
জাকাত আদায়ে গরিমসি করলে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। বর্ণিত হয়েছে, ‘আর যারা সোনা ও রূপা পুঞ্জীভূত করে রাখে, আর তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না, তুমি তাদের বেদনাদায়ক আজাবের সুসংবাদ দাও। যেদিন জাহান্নামের আগুনে তা গরম করা হবে, অতঃপর তা দ্বারা তাদের কপালে, পার্শ্বে এবং পিঠে সেঁক দেওয়া হবে। (আর বলা হবে) ‘এটা তা-ই যা তোমরা নিজদের জন্য জমা করে রেখেছিলে। সুতরাং তোমরা যা জমা করেছিলে তার স্বাদ উপভোগ কর।’ -(সূরা তাওবাহ, আয়াত: ৩৫, ৩৬)
জাকাত বলতে ধন-সম্পদের একটি নির্দিষ্ট অংশ দান করাকে বোঝায়। পারিভাষিক অর্থে জাকাত হলো, নিসাবধারীর ধন-মাল, জমির ফসল ও খনিজ সম্পদের ওপর ইসলামি শরিয়ত নির্ধারিত অংশ নির্দিষ্ট খাতে ব্যয় করা। আল্লাহ তায়ালা জাকাত ব্যয়ের খাতগুলো সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন। গরিব-দুঃখীর স্বার্থের প্রতি খেয়াল রেখেই জাকাতের খাতগুলো নির্ধারণ করা হয়েছে।
শরিয়তের বিধান হল, যে ব্যক্তির কাছে যাকাতযোগ্য সম্পদ নিসাব পরিমাণ নেই এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত অন্য ধরনের মাল-সামানাও নিসাব পরিমাণ নেই এই ব্যক্তিকে যাকাত দেওয়া যাবে। অনুরূপভাবে যে ব্যক্তি এমন ঋণগ্রস্থ যে, ঋণ পরিশোধ করার পর তার কাছে নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে না তাকে যাকাত দেওয়া যাবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ১০৫৩৬)