কোরআন শেখা অনেকের জন্যই চ্যালেঞ্জিং বিষয়। অনেক অভিভাবকের জন্যও। শিশুদের জন্য কাজটি আরও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। কারণ, তারা সবকিছু নতুন শিখছে,নতুন দেখছে, হয়তোবা প্রথমবার কোরআনের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে। অধিকাংশ শিশুর কাছেই কোরআন একটি বিদেশি ভাষার কিতাব, যা তারা নামাজে তিলাওয়াত করতে শুনেছে এবং শুনে শুনে নিজে নিজে কিছু অংশ পাঠ করতে শুরু করেছে মাত্র।

নিচে শিশুদের জন্য কোরআন শেখার ৫টি মজার ও কার্যকর পদ্ধতি তুলে ধরা হলো :

১. মুখে বলা ও শোনা

কোরআন মুখস্ত করার জন্য শিশুদের ওপর বাধ্যবাধকতা আরোপ করলে শুরুতেই তাদের আগ্রহ কমে যেতে পারে। আর যদি মুখস্ত করেও ফেলে তাহলে অর্থ বা সৌন্দর্য কিছুই অনুধাবন করতে পারবে না।

প্রতিদিন নামাজে যেসব আয়াত বারবার পড়া হয়। শিশুরা নিয়মিত শুনছেন, তাদের কাছে পরিচিত এমন আয়াতগুলো বেছে বেছে তাদের শোনার ব্যবস্থা করুন। এবং মুখে উচ্চারণ করানোর চেষ্টা করুন। যাতে তারা আগ্রহ হারিয়ে না ফেলে এবং ভয় না পায়।

অনলাইন ও সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক বিখ্যাত ক্বারির রেকর্ড আছে, সেগুলো শিশুদে শোনানোর ব্যবস্থা করুন। 

২. খেলার ছলে শেখা

খেলার মাধ্যমে শিশুরা অনেক কিছুই সহজে শিখে নেয়। কোরআন শেখানোর ক্ষেত্রেও এটা কাজে লাগান—শিশু ও অভিভাবক, সবার জন্যই বিষয়টি আনন্দদায়ক হবে।

এর একটা উপায় হতে পারে— নির্দিষ্ট কিছু আয়াত খুঁজে বের করতে বলুন তাদরে এবং অর্থ ও নির্ভরযোগ্য ব্যাখ্যা বুঝিয়ে বলুন। অথবা শিশুকে এমন কোনো সূরা বা আয়াত পাঠ করতে বুলন, যেটি সে জানে বা পছন্দ করে। কোরআন পাঠের সময় উৎসাহমূলক শব্দ ও প্রশংসা  করুন। ভুলত্রুটি সামলে শিশুদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করুন।

 ৩. বন্ধুবান্ধব বা ভাইবোনদের মাঝে প্রতিযোগিতা

একাধিক শিশু থাকলে ঘড়ি বা মোবাইলে একটা টাইমার ধরে শিশুদের মাঝে হালকা প্রতিযোগিতার আয়োজন করুন। উৎসাহিত করতে তাদের নিজের আগের রেকর্ড ভাঙার লক্ষ্য দিন। এতে শেখার মধ্যে একধরনের উত্তেজনা তৈরি হয়।

৪. কোরআনে বর্ণিত গল্প, উপদেশ বলুন

কোরআন শুধু বিধান নয়, এখানে আছে পূর্ববর্তী নবী-রাসুলদের সমৃদ্ধ ওঅ্যাডভেঞ্চারধর্মী গল্প। মা-বাবার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, জ্ঞানার্জনের উৎসাহ, অধ্যবসায় ইত্যাদি অনেক কাহিনিতে ভরপুর পবিত্র কোরআন।

নবীদের গল্প শিশুর মনে আগ্রহ তৈরি করে এবং কোরআন শেখাকে আরও অর্থবহ করে তোলে। 

এছাড়া স্থানীয় মসজিদ বা ইসলামী জাদুঘরে শিশুদের নিয়ে ঘুরে আসুন। এতে শিশুদের ইন্দ্রিয় জাগ্রত হবে এবং তারা কল্পনায় জুড়ে নিতে পারবে ইতিহাস, স্থাপত্য, ও সংস্কৃতির  বিষয়গুলো।

৫. উৎসাহিত করুন

আপনার শিশু কখনো কোনো পুরো সূরা পড়তে পারলে বা কোরআন থেকে কোনো নবীর গল্প বুঝতে পারলে তাকে উৎসাহিত করুন। প্রয়োজনে ছোটখাটো পুরস্কার দিন। তার প্রশংসা করুন। এতে করে কোরআনের প্রতি তার আগ্রহ বাড়বে। উৎসাহ ও প্রশংসাই শিশুর আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।

সূত্র : মুসলিম প্রো