মুসা (আ.)  এর সম্প্রদায় ছিল বনী ইসরাঈল। তাদের ওপর ফেরাউন অবর্ণনীয় নির্যাতন চালিয়েছিল। তাদের শিশুদের হত্যা করেছিল। নারী-পুরুষদের দাস-দাসী বানিয়ে রেখেছিল। আল্লাহ তায়ালা তাদের সেই নির্যাতন থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন এবং তাদেরকে একত্ববাদের প্রতি আহ্বানের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুসা (আ.)কে। তাদেরকে পূর্ববর্তী নবীদের উম্মতের পরিণতির কথা স্মরণ করিয়ে সঠিক পথে ফেরার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, আর আমি মূসাকে আমার আয়াতসমূহ দিয়ে পাঠিয়েছি যে, 

 وَ لَقَدۡ اَرۡسَلۡنَا مُوۡسٰی بِاٰیٰتِنَاۤ اَنۡ اَخۡرِجۡ قَوۡمَكَ مِنَ الظُّلُمٰتِ اِلَی النُّوۡرِ ۬ۙ وَ ذَكِّرۡهُمۡ بِاَیّٰىمِ اللّٰهِ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِكَ لَاٰیٰتٍ لِّكُلِّ صَبَّارٍ شَكُوۡرٍ

তুমি তোমার কওমকে অন্ধকার হতে আলোর দিকে বের করে আন এবং আল্লাহর দিবসসমূহ তাদের স্মরণ করিয়ে দাও। নিশ্চয় এতে প্রতিটি ধৈর্যশীল, কৃতজ্ঞ ব্যক্তির জন্য রয়েছে অসংখ্য নিদর্শন। (সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ৫)

এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা মূসা আলাইহিস সালাম-কে নির্দেশ দিয়েছেন, তিনি যেন, স্বজাতিকে 'আইয়্যামুল্লাহ' (আল্লাহর দিবসসমূহ) স্মরণ করান। 

আইয়্যামুল্লাহ (আল্লাহর দিবসসমূহ) শব্দটি দুটি অর্থে ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন শাস্তির দিনগুলো, যেমন কাওমে নূহ, আদ ও সামূদের উপর আজাব নাযিল হওয়ার ঘটনাবলী। এসব ঘটনায় বিরাট জাতিসমূহের ভাগ্য ওলট-পালট হয়ে গেছে এবং তারা পৃথিবীর বুক থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় আইয়্যামুল্লাহ (আল্লাহর দিবসসমূহ) স্মরণ করানোর উদ্দেশ্য হবে, এসব জাতির কুফরের অশুভ পরিণতির ভয় প্রদর্শন করা এবং হুঁশিয়ার করা। ‘আইয়্যামুল্লাহ’র অপর অর্থ আল্লাহ তায়ালার নেয়ামত ও অনুগ্রহও হয়।

এ জাতির উপর দিন-রাত আল্লাহর যেসব নেয়ামত বর্ষিত হয়েছে এবং যেসব বিশেষ নেয়ামত তাদেরকে দান করা হয়েছে, সেগুলো স্মরণ করিয়ে আল্লাহর আনুগত্য ও তাওহিদের দিকে আহবান করার কথা বলা হয়েছে।

যেমন, তীহ উপত্যকায় তাদের মাথার উপর মেঘের ছায়া, আহারের জন্য মান্না ও সালওয়ার অবতরণ, পানীয় জলের প্রয়োজনে পাথর থেকে ঝর্ণা প্রবাহিত হওয়া ইত্যাদি। 

এগুলো স্মরণ করানোর লক্ষ্য হবে এই যে, ভাল মানুষকে যখন কোন অনুগ্রহদাতার অনুগ্রহ স্মরণ করানো হয়, তখন সে বিরোধিতা ও অবাধ্যতা করতে লজ্জা বোধ করে। এখানে দু’টি অর্থই উদ্দেশ্য হতে পারে।