মহানবী (সা.) যে সাহাবিকে বন্ধু বানাতে চেয়েছিলেন
হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে আল্লাহ তায়ালা শেষ উম্মতের নবী বানিয়েছেন। তাকে মানুষের হেদায়েতের জন্য নির্বাচন করেছেন আল্লাহ তায়ালা। পৃথিবীর অন্য সব কিছু থেকে মুক্ত হয়ে তিনি শুধু মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করেছেন। পৃথিবীতে তার কোনো বন্ধু ছিল না। তিনি ছিলেন আল্লাহর হাবিব বা প্রিয় ব্যক্তি।
রাসুল (সা.) এক হাদিসে নিজেই বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা আমাকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করেছেন। যেমন তিনি বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন ইবরাহীম আলাইহিস্ সালামকে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৮২৭)
বিজ্ঞাপন
পৃথিবীতে রাসুল (সা.)-এর কোনো বন্ধু ছিল না। যদি থাকতো তবে তিনি একজন সাহাবিকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করতেন। তিনি হলেন হজরত আবু বকর (রা.)। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন—
বিজ্ঞাপন
মনে রেখ, আমি প্রত্যেক অন্তরঙ্গ বন্ধুর অন্তরঙ্গতা থেকে বিমুক্ত ঘোষণা করছি, যদি আমি কাউকে ‘খলীল’ বা অন্তরঙ্গ বন্ধু গ্রহণ করতাম, তবে আবু বকরকে গ্রহণ করতাম। তোমাদের সঙ্গী (অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই) আল্লাহর খলীল বা অন্তরঙ্গ বন্ধু। (মুসলিম, হাদিস : ২৩৮৩)
আবু বকর (রা.) জীবনের শুরু থেকেই রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে ছিলেন। ইসলামের সূচনা লগ্নে যখন মক্কার লোকেরা ইসলাম গ্রহণ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলেন, তখন তিনি কোনো ধরনের সংশয় ছাড়া ইসলাম গ্রহণ করেন। নবীজির কঠিন সময়গুলোতে তিনি পাশে ছিলেন। হিজরতের পথে নবীজির সঙ্গী ছিলেন তিনি।
ইসলামের পক্ষের যুদ্ধগুলোতে জান-মাল দিয়ে সঙ্গে ছিলেন। নিজের সব কিছুর থেকে নবীজিকে বেশি ভালোবাসতেন আবু বকর (রা.)।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু বকর (রা.) সম্পর্কে বলেছেন, আমি প্রতিটি মানুষের ইহসান পরিশোধ করেছি। কিন্তু আবু বকরের ইহসানসমূহ এমন যে তা পরিশোধ করতে আমি অক্ষম। তার প্রতিদান আল্লাহ দেবেন। তার অর্থ আমার উপকারে যেমন এসেছে, অন্য কারো অর্থ তেমন আসেনি।
তাবুকের যুদ্ধে তিনি তার সব সম্পদ দান করেছিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাকে প্রশ্ন করেছিলেন, তোমার পরিবারের জন্য কি রেখে এসেছ? তিনি তখন উত্তর দিয়েছিলেন, তাদের জন্য আল্লাহ ও তার রাসূলই যথেষ্ট।