আমেরিকায় ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক রাষ্ট্রদূত হলেন যে মুসলিম

মার্কিন সিনেট আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতাবিষয়ক রাষ্ট্রদূত হিসেবে একজন মুসলিমকে চূড়ান্ত নিয়োগ দিয়েছে। তার নাম রাশাদ হোসাইন। সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেয়ে ভারতীয় বংশোদ্ভূত রাশেদ হোসেনের চূড়ান্ত অনুমোদনের খবর জানিয়ে অফিস অব ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম।

শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) এক টুইট বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির অফিস অব ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে সিনেট রাশাদ হুসাইনকে নিশ্চিত করেছে। আমরা এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। অতি শিগগিরই আমরা তাকে স্বাগত জানাতে আমরা অপেক্ষা করছি।

উল্লেখ্য যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত ৩০ জুলাই  আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতাবিষয়ক অ্যাম্বাসাডর-অ্যাট লার্জ হিসেবে রাশাদ হুসাইনকে মনোনয়ন মনোয়ন দেন। এর আগে  এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রশাসনের সময় তিনি অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি)-তে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ প্রতিনিধি দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও স্ট্র্যাটেজিক কাউন্টার টেরোরিজম কমিউনিকেশনসে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত এবং হোয়াইট হাউসের উপ-সহযোগী হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন।

রাশাদ হোসাইন সম্পর্কে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, একজন দক্ষ আইনজীবী ও হোয়াইট হাউসের বিশ্বস্ত কর্মী। কায়রোতে আমি যে অংশীদারিত্বের আহ্বান করেছিলাম- তিনি এর উন্নয়নে প্রধান ভূমিকা পালন করেন। তাছাড়া পবিত্র কোরআনের একজন হাফিজ হিসেবে তিনি আমেরিকান মুসলিম সম্প্রদায়ের একজন সম্মানিত সদস্য। গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করায় আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই।

তার নিয়োগকে মুসলিম সমাজ ও আমাদের জাতির জন্য এটি একটি ঐতিহাসিক দিন বিবেচনা করছে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম মুসলিম নাগরিক অধিকার এবং অ্যাডভোকেসি সংস্থা দ্য কাউন্সিল অন আমেরিকান ইসলামিক রিলেশনস (সিএআইআর)। অভিবাদন জানিয়ে এক বিবৃতিতে সংস্থাটির উপপরিচালক এডওয়ার্ক আহমদ মিটচেল বলেন, আমরা বিশ্বাস করি যে, তিনি চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নজিরবিহীন গণহত্যার সম্মুখীন উইঘুর মুসলিমসহ বিশ্বজুড়ে হুমকির মুখে থাকা সব সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা করবেন।

রাশাদ হুসাইনের বয়স ৪২ বছর। তার জন্ম আমেরিকার ওয়াইমিংয়ে। তার বাবা প্রকৌশলী মুহাম্মদ আকবর হুসাইন ও মা রুকাইয়া। তারা উভয়ে ভারতের বিহার থেকে যুক্তরাষ্ট্রে দেশান্তরিত হন। রাশাদ যুক্তরাষ্ট্রের চ্যাপেল হিলের ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলিনা থেকে দর্শন ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন। নিউ হ্যাভেন সিটির ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন। সেখানে তিনি ইয়েল ল জার্নালের সম্পাদক ছিলেন। এরপর তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক ও প্রশাসন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। এ সময় তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি বিষয়েও ডিগ্রি নেন।

রাশাদ জর্জটাউন ল সেন্টার এবং জর্জটাউন স্কুল অফ ফরেন সার্ভিসে আইন বিষয়ক অধ্যাপক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি উর্দু, আরবি ও স্পেনিশ ভাষায় দক্ষতার সঙ্গে অনর্গল কথা বলতে পারেন। ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিভিন্ন এজেন্সিকে অসামান্য সেবা দেওয়ায় রাশাদ হুসাইনকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়।