দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে প্রত্যাবর্তনটা সুখকর হলো না মুস্তাফিজুর রহমানের। আগের দিন রাতে শারজাহতে স্বাগতিক আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে ম্যাচ খেলে বিশ্রামের সুযোগ পাননি। দিল্লির বিমানে চেপে বসেছিলেন। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আজ নেমে পড়লেন দিল্লির মাঠে। যদিও বোলিংয়ে তেমন কিছু করতে পারেননি তিন ম্যাচের জন্য ৬ কোটি রুপিতে শেষ মুহূতে দল পাওয়া টাইগার এই পেসার। দলের বাকি বোলাররা ছিলেন আরও লাগামহীন। গুজরাট টাইটান্সের দুই ওপেনার সাই সুদর্শন ও শুভমান গিল ঝড়ে উড়ে গেছে দিল্লি।  

কেএল রাহুলের ‘মাস্টারক্লাস’ শতকে ভর করে দিল্লির ছুঁড়ে দেওয়া ২০০ রানের টাগেট তাড়া করতে নেমে কোনো উইকেট না হারিয়েই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় গুজরাট। সেই সঙ্গে প্রথম দল হিসেবে প্লে-অফও নিশ্চিত করল গিলরা। গুজরাটের জয়ে শেষ চারে পৌঁছে গেছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জাস বেঙ্গালুরু এবং পাঞ্জাব কিংসও। অন্যদিকে, প্লে-অফ নিশ্চিত করতে হলে এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প ছিল না দিল্লির সামনে। এমন ম্যাচে ফ্র্যাঞ্চাইজিটির বোলারদের নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করলেন গিল-সুদশনরা। 

এর আগে ‍দুই আসরে দিল্লির হয়ে খেলেছিলেন মুস্তাফিজ। সবশেষ খেলেছেন চেন্নাইয়ে। এবারের আইপিএলের আগে নিলামে ছিলেন অবিক্রিত। শেষ মুহূর্তে ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়। ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে আইপিএল বিরতির পর বেশ কয়েকজন বিদেশি না ফেরায় ডাক পেয়ে যান মুস্তাফিজ। একই সময়ে বাংলাদেশ দলের খেলা থাকলেও বেশ নাটকীয়তার পর এক সপ্তাহের জন্য এনওসি পান টাইগার পেসার। 

দিল্লিতে প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে তিন ওভার বল করে ২৪ রান খরচ করেছেন মুস্তাফিজ। উইকেটের দেখা পাননি একটিও। যদিও তুলনামূলক অন্য বোলারদের চেয়ে কিছুটা মিতব্যয়ী ছিলেন ফিজ। দেদারসে রান বিলিয়েছেন নটরাজনরা। 

দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে টস হেরে শুরুতে ব্যাটিংয়ে নামে স্বাগতিকরা। ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী দেখিয়েছেন কেএল রাহুল। তুলে নিয়েছেন সেঞ্চুরি। যদিও বাকি ব্যাটাররা কেউই যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেনি। ৩ উইকেটে ১৯৯ রানের পুঁজি গড়তে পারে দিল্লি। মাত্র ৬৫ বলে ১১২ রানে অপরাজিত ছিলেন রাহুল।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই হাত খুলে খেলতে থাকেন গুজরাটের দুই ওপেনার সাই সুদর্শন ও শুভমান গিল। শেষ পর্যন্ত জয় নিয়েই মাঠ ছাড়লেন। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে ব্রেকথ্রু’র আশায় মুস্তাফিজের হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন দিল্লি কাপ্তান অক্ষর প্যাটেল। নিজের প্রথম ওভারে উইকেটের দেখা না পেলেও দারুণ বল করেন ফিজ। মাত্র ৬ রান দেন। এরপর ষষ্ঠ ওভারে আবারও আক্রমণে আসেন মুস্তাফিজ। এবার প্রথম বাউন্ডারি হজম করেন। উইকেটের দেখা না পেলেও খরচ করেছেন ৭ রান। 

এরপর আবার যতক্ষণে আক্রমণে আসেন, ততক্ষণে ম্যাচের ভাগ্য লেখা হয়ে গেছে অনেকটাই। এবার কিছুটা খরুচে ছিলেন মুস্তাফিজও। ১৬ তম ওভারের প্রথম দুই বলে পরপর চার হজম করেন। নিজের তৃতীয় ওভারে দেন ১১ রান। এরপর আর আক্রমণে আসার সুযোগই হয়নি। এক ওভার বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে যায় গুজরাট। শেষ ওভারটা হয়তো তাকে দিয়েই করানোর পরিকল্পনা ছিল দিল্লির। 

গুজরাটের কাছে লজ্জাজনক হারের পরও দিল্লির প্লে-অফের আশা এখনো পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি। তবে বাকি থাকা দুই ম্যাচে জিততে হবে মুস্তাফিজদের, সেই সঙ্গে অন্যদের দিকেও তাকিয়ে থাকতে হবে। 

এফআই/