কাগজে-কলমে ম্যাচটা আফগানিস্তান বনাম শ্রীলঙ্কার, না থেকেও ছিল বাংলাদেশ। এক ম্যাচেই ঝুলেছিল তিন দলের সুপার ফোরের টিকিট। রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে শেষমেশ আফগানিস্তানকে ৬ উইকেটে হারিয়ে সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কা। লঙ্কানদের জয়ের সুবাদে সুপার ফোর নিশ্চিত হয়েছে বাংলাদেশেরও। অন্যদিকে, হেরে ছিটকে গেছে আফগানিস্তান।

আজকের ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে আফগানরা ১৭০ রানের টার্গেট দেওয়ার পর বাংলাদেশের সমীকরণটা ছিল এমন-হয় শ্রীলঙ্কাকে এই রান তাড়া করে জিততে হতো, নয়তো ১০১ রানের মধ্যে অলআউট হতে হতো।

আবুধাবিতে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি দাঁড় করিয়েছিল আফগানিস্তান। মাত্র ২২ বলে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬০ রান করেছেন মোহাম্মদ নবি। জবাবে ঝড় তোলেন কুশাল মেন্ডিস। ৫২ বলে ৭৪ রানের অপরাজিত ইনিংসে যেন সব আলো কেড়ে নিলেন। সেই সঙ্গে দলের জয়ও নিশ্চিত করলেন। ৮ বল হাতে রেখেই ৬ উইকেটের জয় পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। এ নিয়ে গ্রুপপর্বে অপরাজিত থাকল দলটি।

যদিও শেষের ঝড়ে বড় পুঁজি গড়ার পর বল হাতে চেষ্টার ত্রুটি রাখেনি রশিদ খানরা। লঙ্কানরা নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিলেন এক কুশাল মেন্ডিসই। তাকে ভালো সঙ্গ দিয়েছেন কুশাল পেরেরা (২৮) ও কামিন্দু মেন্ডিস (২৬*)।

এর আগে, টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিলেন আফগানিস্তানের দুই ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও সাদিকুল্লাহ অটল। বিশেষ করে গুরবাজ বেশ আক্রমণাত্মক ছিলেন। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি। তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। তার আগে ৮ বলে করেন ১৪ রান।

তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি করিম জানাত। এই টপ অর্ডার ব্যাটার ৩ বল খেলে করেন এক রান। অভিজ্ঞ এই ব্যাটারকে বোল্ড করেন থুসারা। ৩২ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারানো আফগানিস্তান তাকিয়ে ছিল অটলের দিকে। তবে হতাশ করেছেন এই তরুণ ওপেনার। থুসারার বলে বোল্ড হন তিনি। তাতে পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেট হারিয়ে ৪৫ রান করেছিল আফগানিস্তান।

চতুর্থ উইকেট জুটিতে ইব্রাহিম জাদরান ও ডারউইস রাসুলি মিলে চেষ্টা করেছেন দলকে টেনে তোলার। তবে ১৬ বল খেলে ৯ রানের বেশি করতে পারেননি রাসুলি। ছয়ে নেমে ব্যর্থ আজমতউল্লাহ ওমরজাই। নিজের খেলা প্রথম বলেই জীবন পাওয়া এই ব্যাটার ৪ বলে ৬ রান করেছেন।

বাকিদের আসা-যাওয়ার মধ্যেও এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন ইব্রাহিম। উইকেটে থিতু হওয়ার পর গিয়ার পরিবর্তন করতে গিয়ে হিতে বিপরীত হয়। বড় শট খেলতে গিয়ে সীমানায় ধরা পড়েন। ২৪ রান করে ইব্রাহিম ফিরলে ৭৯ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। দ্রুত উইকেট হারিয়ে দল যখন খাদের কিনারায় তখন ত্রাতা হয়ে আসেন নবি ও রশিদ খান। দুজনে মিলে সপ্তম উইকেট জুটিতে ৩৫ রান যোগ করেন। ২৩ বলে ২৪ করেছেন রশিদ।

রশিদ ফেরার পর দেড়শ রানও কঠিন ছিল আফগানিস্তানের জন্য। তবে সেই কঠিন কাজটাই সহজেই করেন নবি। শেষ ওভারে দুনিথ ভেল্লালেগেকে বোলিংয়ে এনেছিলেন চারিথ আসালঙ্কা। এই বাঁহাতি স্পিনারকে সামনে পেয়ে রীতিমতো টর্নেডো বইয়ে দেন নবি। ওভারের প্রথম ৫ বলে ৫টি ছক্কা হাঁকান তিনি। মোট ৩২ রান আসে সেই ওভারে। ইনিংসের শেষ বলে রান আউট হওয়ার আগে ২২ বলে ৬০ রান করেন নবি। তবে শেষপযন্ত নবির ঝড় আড়াল করে দিলো মেন্ডিসের অনবদ্য এক ইনিংস।

এফআই/এএমকে